বাসস
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:১৩

লিভারপুলের জয়ে গোল পেয়েছেন সালাহ, চেলসির সাথে পয়েন্ট হারালো সিটি

লন্ডন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরেই গোল পেয়েছেন মোহামা¥দ সালাহ। গতকাল ব্রেন্টফোর্ডকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করার ম্যাচটিতে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন মিশরীয় এই তারকা। এদিকে দিনের  আরেক হাই ভোল্টেজ ম্যাচে চেলসির সাথে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি।
বার্নলিকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিভারপুলের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে আর্সেনাল। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে থাকা গানার্সদের থেকে দুই পয়েণ্ট ও তৃতীয় স্থানে থাকা সিটির তুলনায় চার পয়েন্ট এগিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে জার্গেন ক্লপের লিভারপুল। 
দিয়েগো জোতার ইনজুরিতে প্রথমার্ধ শেষ হবার প্রাক্কালে বদলী বেঞ্চ থেকে মাঠে নামেন সালাহ। নতুন বছরের প্রথম দিনে নিউক্যাসলের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচটির পর এই প্রথমবারের মত লিভারপুলের জার্সি গায়ে মাঠে নামলেন সালাহ। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে উঠে আফ্রিকান নেশন্স কাছে সালাহ মিশরকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিউক্যাসলের বিপক্ষে ম্যাচের পর রেডসদের হয়ে প্রথম গোলও কাল করেছেন সালাহ। ৩১ বছর বয়সী সালাহ এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় চলতি মৌসুমে ১৯ গোল করলেন। গত সাত লিগ ম্যাচে এটি লিভারপুলের ষষ্ঠ জয়।  
জিটেক কমিউনিটি স্টেডিয়ামে ৩৫ মিনিটে জার্গেন ক্লপের দলকে এগিয়ে দেন ডারউইন নুনেজ । বিরতির পর ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এ্যালেক্সিস ম্যাক এ্যালিস্টার। মৌসুমে এটি তার দ্বিতীয় গোল। ১৩ মিনিট পর সালাহ ব্যবধান ৩-০’তে নিয়ে যান। ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে ৭৫ মিনিটে এক গোল পরিশোধ করেছেন ইভান টনি। কিন্তু কোডি গাকপোর শেষ মুহূর্তের গোলে বড় জয় নিশ্চিত হয় লিভারপুলের। 
এই জয় লিভারপুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও মৌসুমের এই সময়ে এসে প্রথমার্ধে নুনেজ, জোতা ও কার্টিস জোনসের ইনজুরি ক্লপের দু:শ্চিন্তা বাড়িয়েছে। এ সম্পর্কে ক্লপ বলেছেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ম্যাচ খেলেছে সালাহ। সে আজ হ্যাট্রিক করতে পারতো। যে গোলটি সে দিয়েছে তা সত্যিই দুর্দান্ত। প্রতিটি পজিশনে যদি আমাদের আরো একজন করে বেশী খেলোয়াড় থাকতো তবে সেটা পুরো দলকে সহযোগিতা করতে পারতো। কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোন সুযোগ আমাদের হাতে নেই।’
ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে সিটির হতাশাজনক ফলাফলে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। ৪১ মিনিটে সাবেক সিটি উইঙ্গার  রাহিম স্টার্লিং ১২ গজ দুর থেকে নিকোলাস জ্যাকসনের পাসে কার্লিং শটে চেলসিকে এগিয় দেন। ৮৩ মিনিটে রড্রির শট ট্রেভ চালোবাহর ডিফ্লেকটেড হয়ে জালে জড়ালে সমতায় ফিরে সিটিজেনরা। লিভারপুলের থেকে এক ম্যাচ কম খেলা পেপ গার্দিওলার দল ঘরের মাঠে লম্বা সময় ধরে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রেখেছে। কিন্তু সব ধরনের প্রতিযোগিতায় প্রথম দল হিসেবে ১২ ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। 
আর্লিং হালান্ডের গোল খরা প্রসঙ্গে গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমি ১১ বছর খেলে মাত্র ১১ গোল করেছি। সে কারনে আমি খুব বেশী পরামর্শ আর্লিংকে দিতে পারিনা। আশা করছি পরের ম্যাচে সে গোল করবে। প্রথমার্ধে আমরা মোটেই ভাল খেলতে পারিনি। এই জায়গায় আমাদের আরো বেশী কাজ করতে হবে।’ 
টার্ফ মুরে আরো একটি শক্তিশালী পারফরমেন্সের মাধ্যমে আর্সেনাল টানা পঞ্চম জয় নিশ্চিত করেছে। মিকেল আর্তেতার দল দুবাইয়ে উষ্ণ আবহাওয়ায় অনুশীলন করার পর থেকে অনেকটাই বদলে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেবিল টপার লিভারপুলকে পরাজিত করার পর ওয়েস্ট হ্যামকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে। তলানির দ্বিতীয় দল বার্নলির বিপক্ষেও কাল কোন ছাড় দেয়নি লিভারপুল। চার মিনিটে গাব্রিয়েল মার্টিনেলির পাস থেকে মার্টিন ওডেগার্ড গানার্সদের এগিয়ে দেন। ৪১ মিনিটে লোরেঞ্জ আসিগননের বিপক্ষে লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ডের আদায় করা পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করেন বুকায়ো সাকা। 
বিরতির পরপই ওডেগার্ডের এ্যাসিস্টে সাকা নিজের দ্বিতীয় গোল পূরণ করেন। শেষ চার ম্যাচে ইংলিশ উইঙ্গারের এটি ষষ্ঠ গোল। ৬৬ মিনিটে পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ান ট্রোসার্ড। জ্যাকুব কিউইরের সহায়তায় ম্যাচ শেষে ১২ মিনিট আগে শেষ গোলটি করেন কেই হাভার্টজ । 
আর্তেতা বলেন, ‘আমরা দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। খেলোয়াড়রা সবাই কাজ করতে ভালবাসে, এখানকার সময়টা তারা বেশ উপভোগ করছে। তারা আরো বেশী কাজ চায়, যা সত্যি দারুন বিষয়।’
উত্তর লন্ডনে হুয়াও গোমেসের জোড়া গোলে উল্ফস বিস্ময়কর ভাবে ২-১ ব্যবধানে টটেনহ্যামকে পরাজিত করেছে। এই পরাজয়ে টটেনহ্যামের শীর্ষ চারে টিকে থাকার স্বপ্নে বড় বাঁধা পড়েছে। ওলি ওয়াটকিন্সের দুই গোলে ফুলহ্যামকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে টটেনহ্যামকে হটিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে এ্যাস্টন ভিলা। সিটি গ্রাউন্টে ওয়েস্ট হ্যামকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে নটিংহ্যাম ফরেস্ট। সেন্ট জেমস পার্কে বোর্নমাউথের সাথে ২-২ গোলে ড্র করে এডি হাউয়েল দল কোনমতে পরাজয় এড়িয়েছে।