বাসস
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:১৬

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: স্টপেজ টাইমে গালেনোর গোলে আর্সেনালকে পরাজিত করেছে পোর্তো

পোর্তো (পর্তুগাল), ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : স্টপেজ টাইমে গালেনোর  করা গোলে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচে আর্সেনালকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে পর্তুগালে ক্লাব পোর্তো। ম্যাচ শেষে আর্সেনাল বস মিকেল আর্তেতা দলের এই পরাজয়ের পিছনে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিকে দায়ী করেছেন।
সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান এলিট ক্লাব প্রতিযোগিতার নক আউট পর্বে খেলতে আসা আর্সেনাল পোর্তোর গোছানো রক্ষনভাগের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি। উল্টো ৯৪ মিনিটে গালেনোর দুর্দান্ত শটটি আটকানোর সাধ্য ছিলনা আর্সেনালের। 
পর্তুগীজ এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আট ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড শেষ করলো গানার্সরা। আগামী ১২ মার্চ লন্ডনে ফিরতি লেগে মাঠে নামার আগে আর্সেনালকে অনেক কিছু নিয়েই কাজ করতে হবে। 
আর্তেতা বলেছেন, ‘আমরা তাদের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠতে পারিনি। আমাদের মধ্যে আগ্রাসনের অভাব ছিল। বিশেষ করে শেষ ভাগে আমরা যখন বেশ কিছু সুযোগ তৈরী করেছিলাম তখন নিজেদের এগিয়ে নিতে পারিনি। আমরা আরো ভাল খেলতে পারতাম।’
২০১০ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল আর্সেনাল। ঐ আসরে শেষ ষোলতে তারা পোর্তাকে পরাজিত করেছিল। এখন পর্তুগীজ ক্লাবটি তাদের থেকে এগিয়ে গেল। 
আর্তেতা বলেন, ‘আমি মনে করি পোর্তোর রক্ষনভাগ বেশ শক্তিশালী ছিল। যে কারনে প্রতিবারই তারা আমাদের ছন্দ নষ্ট করেছে। আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে চাই। কিন্তু এজন্য প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে হবে। এমিরেটসে ফিরতি লেগে এটাই আমাদের মুল লক্ষ্য।’
কালকের ম্যাচে একটি শটও ঠিকমত টার্গেটে নিতে পারেনি আর্সেনাল। এর মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে দলের বড় ব্যবধানের জয়গুলো ম্লান হয়ে গেছে। আর্সেনাল মিডফিল্ডার ডিক্লান রাইস বলেছেন, ‘যখন ম্যাচের ফলাফল ০-০ তখন ঘড়ির কাটা ৯৩ মিনিট পেরিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচ জিততে না পারলে অন্তত হারাও উচিৎ না। পোর্তো আমাদের সমুচিত জবাব দিয়েছে। কারন আমরা শেষ মুহূর্তে গোল হজম করেছি। কিন্তু আমরা জানি কি করতে হবে। কোনভাবেই আমরা মাথানত করবো না।’
সপ্তাহের শেষে প্রিমিয়ার লিগে বার্নলিকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করা দলটি নিয়েই টানা তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নেমেছিল আর্সেনাল। আগামী সপ্তাহে ৪১ বছরে পা দিতে যাওয়া পোর্তো ডিফেন্ডার পেপে কাল ক্যারিয়ারের ১১৯তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচ খেলতে মানে নেমেছিলেন। এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় এখন তিনি। তার বিপরীতে আর্সেনালের মূল দলের খেলোয়াড়রা সবাই মিলে কালকের ম্যাচের আগে খেলেছে ১০৪টি ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অনভিজ্ঞতা সত্তেও আর্তেতা বলেছেন ইউরোপের সেরা আসরে নিজেদের প্রমানের ব্যপারে তার দলের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। 
প্রিমিয়ার লিগে টানা পাঁচ জয় দিয়ে গানার্সরা ২০২৪ সাল শুরু করেছে। ঐ ম্যাচগুলোতে আর্সেনাল ২১ গোল করেছে। দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে আর্সেনাল শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ২০০৪ সালের পর প্রথমবারের মত ইংল্যান্ডে নিজেদের আধিপত্য দেখানো উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি ইউরোপীয়ান আসরেও সাফল্যের জন্য মুখিয়ে আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কখনই শিরোপা জেতা হয়নি। ২০০৬ সালে একমাত্র ফাইনালে তারা বার্সেলোনার কাছে পরাজিত হয়েছিল। 
এদিকে ১৯৮৭ ও ২০০৪ সালের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন পোর্তো এবার পর্তুগীজ লিগে তৃতীয় স্থানে থেকে হতাশ করেছে। কাল অবশ্য পুরো ম্যাচ জুড়েই তাদের আধিপত্য ছিল। পজিশনের দিক থেকে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধে আর্সেনালকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে স্বাগতিকরাই শুরু থেকে ম্যাচের সবচেয়ে সেরা সুযোগগুলো তৈরী করেছে। ফ্রান্সিসকো কনসেইকাওর ডানদিকের ক্রস গ্যাব্রিয়েল মাগালগেস ধরতে ব্যর্থ হন। এই সুযোগে গালেনো বল পেয়ে কোনাকুনি শট নিলেও সফল হতে পারেননি। কর্ণার থেকে উইলিয়াম সালিবা ও কেই হাভাটর্জের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। বুকায়ো সাকা ও গাব্রিয়েল মার্টিনেলির সাথে আক্রমনভাগে আরো একবার লিনড্রো ট্রোসার্ড খেলতে নেমেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রাইসের কর্ণার থেকে ট্রোসার্ডের ভলি পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৭৪ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র পরিবর্তন করে ট্রোসার্ডের স্থানে জর্জিনহোকে মাঠে নামান আর্তেতা। কিন্তু তারপরও সফল হতে পারেনি আর্সেনাল। উল্টো ইনজুরি টাইমে গোল হজম করে হতাশাজনক পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।