বাসস
  ০২ জুন ২০২৪, ১৪:৫৯

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেকর্ড করেই বিদায় নিলে ক্রুস

লন্ডন, ২ জুন ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ক্যারিয়ারে  ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের রূপকথার গল্প শেষে বর্ণাঢ্য ক্লাব ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন রিয়াল মাদ্রিদের জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। 
শনিবার ওয়েম্বলির ফাইনালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদেও ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ক্রুস। 
এই জার্মান তারকার সাথে সতীর্থ ডানি কারভাহাল, নাচো ও লুকা মড্রিচ ইউরোপীয়ান কাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ড মাদ্রিদ লিজেন্ড পাকো জেনটোর পাশে নাম লিখিয়েছেন। 
রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য জানিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এই তারকার জন্য মাদ্রিদের দরজা সবসময়ই উন্মুক্ত থাকবে। গত মাসে হঠাৎ করেই ক্লাব ক্যারিয়ার শেষের সাথে ঘরের মাঠে আসন্ন ইউরোর পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকেও অবসরের ঘোষনা দিয়েছিলেন ক্রুস। আনচেলত্তি বলেছেন ক্রুস যদি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফিরে আসতে চান তবে রিয়াল সবসময় তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। 
আনচেলত্তি বলেন,  ‘সে শীর্ষে থেকেই সব শেষ করেছে। এর থেকে ভাল বিদায় আর হতে পারেনা। সে ক্লাবের একজন লিজেন্ড। সে যা করে গেছে তা অবশ্যই সবাই মনে রাখবে। শুধুমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে নয়, তার পেশাদারীত্ব, তার নেতৃত্ব সকলের জন্য অনুকরণীয়। এই ১০ বছরে একদিনেও সে অনুপস্থিত থাকেনি। আশা করছি ক্রুস তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে, আর সেটা যদি হয় আমরা তার সাথে আছি।’
ক্রুস এমন একটি জায়গা থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে বিদায় জানালো যেখানে তার শিরোপা জয় শুরু হয়েছিল। হোম অব ইংলিশ ফুটবলে ২০১৩ সালে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে তিনি প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করেছিলেন। যদিও ইনজুরির কারনে ঐ আসরের ফাইনালে তিনি খেলতে পারেননি। 
পরের বছর ব্রাজিলে বিশ^কাপ জয়ে জার্মানীকে সহযোগিতা করেছেন। ঐ বছরই মাদ্রিদে যোগ দেন ক্রুস। এরপর স্প্যানিশ জায়ান্টদের ইউরোপীয়ান ফুটবলের দ্বিতীয় স্বর্ণযুগের অংশ হয়ে যান। জেনটো যখন মাদ্রিদের খেলতেন তখন ১৯৫৫-১৯৬০ সালে পরপর পাঁচটি ইউরোপীয়ান কাপ জয় করেছিলেন।
এনিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত ১১ মৌসুমে ষষ্ঠ শিরোপা জয় করলো রিয়াল। এর সবগুলোরই অংশ ছিলেন ক্রুস।
কাল বিদায় বেলায় ক্রুস বলেছেন, ‘আমি সত্যিই এটাকে মিস করবো। এই জয়ের মধ্য দিয়েই আমি সবাইকে বিদায় জানাতে চাই। এই শিরোপা আমার কাছে অবিশ^াস্য রকম আনন্দের।’
কাল ফাইনালে প্রথমার্ধে উজ্জীবিত ডর্টমুন্ডকে সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে রিয়ালকে। করিম আদেইয়েমি ও নিকালস ফুলক্রুগ গোলের সহজ সুযোগগুলো নষ্ট না করলে পিছিয়ে থেকেই হয়তো বিরতিতে যেতে হতো ফেবারিট মাদ্রিদকে। 
ক্রুস বলেন, ‘প্রথমার্ধ আমরা মোটেই ভাল খেলতে পারিনি। ধীরে ধীরে ম্যাচের গতি বুঝতে পেরে আমরা নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গেছি। ডর্টমুন্ডের থেকে ভাল দল হিসেবেই আমরা খেলেছি, যদিও এটা প্রমানে কিছুটা সময় লেগেছে।’
ওয়েম্বলিতে কাল সবচেয়ে বেশী পাস ক্রুসই দিয়েছেন, একইসাথে বলে সবচেয়ে বেশী টাচও তিনি করেছেন। দ্বিতীয়ার্ধে তার একটি ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিক ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল রক্ষা না করলে বিদায়বেলায় দারুন এক গোলের মালিক  হয়ে থাকতে পারতেন ক্রুস। 
কিন্তু তারপরও ফাইনালে ক্রুসই ছিলেন সেরা। তার কর্ণার থেকেই কারভাহালের হেডে মাদ্রিদ এগিয়ে যায়। 
ইউরোতে জার্মানীর হয়ে ঘরের মাঠে ক্যারিয়ারে আরো কিছু অর্জণ যুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে ক্রুসের। ২০২১ সালে ইউরোর শেষ ষোল থেকে বিদায়ের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষনা দিয়েছিলেন ক্রুস। কিন্তু জার্মান কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যানের অনুরোধে ঘরের মাটিতে শেষ বারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টে খেলার জন্য তিনি আবারো ইউরোর দলে ফিরেছেন।