বাসস
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১০

জুয়া ও ম্যাচ পাতানোর দায়ে চায়নায় ৪৩ জন আজীবন নিষিদ্ধ

বেইজিং, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : জুয়ায় অংশ নেয়া ও ম্যাচ পাতানোর দায়ে চাইনিজ ফুটবল এসোসিয়েশন (সিএফএ) ৪৩ জনকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে চায়না জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তিন খেলোয়াড়সহ দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড় সন জুন-হো রয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রয়ত্ত সংবাদ মাধ্যম আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। 
প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের অধীনে বেইজিং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের ক্রীড়াঙ্গন, বিশেষ করে ফুটবলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং দুর্নীতির দায়ে অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সি জিনপিং নিজেও অনেক বড় একজন ফুটবল ভক্ত। তিনি সবসময়ই স্বপ্ন দেখেন চায়নায় একদিন বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে ও চায়না বিশ্বকাপ জিতবে। কিন্তু বারবার দূর্নীতির অভিযোগে তার সেই স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। একইসাথে মাঠের পারফরমেন্সেও চীন অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। 
চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশীয় খেলায় অবৈধ জুয়া ও ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে দুই বছর তদন্তের পর ১২৮ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৪৩ জনকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ হওয়া বেশির ভাগ ব্যক্তিই পেশাদার খেলোয়াড় ছিলেন।
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সৌদি আরবের বিপক্ষে মাঠে নামার ঘন্টাখানেক আগে চাইনিজ ফুটবলে এই নিষেধাজ্ঞার খবর এসেছে। এক সপ্তাহ আগে চির প্রতিদ্বন্দ্বী জাপানের কাছে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে চাইনিজ জাতীয় ফুটবল দল। 
চাইনিজ ফুটবল এসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে চাইনিজ সুপার লিগে শানডং টাইশানের হয়ে খেলা সন ম্যাচ পাতানোর সাথে জড়িত এবং তিনি ঘুষ নিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার কাতার বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ খেলেছেন। ২০২৩ সালের মে মাসে চায়নায় তাকে এই অভিযোগে আটক করা হয়। ১০ মাস জেল খাটার পর মার্চে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া ফিরে গেছেন। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ঘরোয়া লিগে খেলছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য শিগগিরই ৩২ বছর বয়সী সন একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে তার প্রতিনিধি জানিয়েছেন। 
সন ছাড়াও শানডং টাইশানের আরেক সাবেক খেলায়াড় জিন জিংদাও আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছে। তার সাথে নিষিদ্ধ হওয়া চাইনিজ জাতীয় দলের অপর দুই খেলোয়াড় হলেন গু টিয়ানয়ু ও গু চাও। 
শুধু চীনের ফুটবলাররাই নন, সিএফএর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও কড়া নজরদারিতে আছেন। তদন্তে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় এ পর্যন্ত সিএফএর প্রায় ১০ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘বিপুল পরিমাণ ঘুষ’ নেওয়ার দায়ে গত মার্চে সিএফএর সাবেক চেয়ারম্যান চেন জুইউয়ানকে আজীবন কারাদন্ড দিয়েছে চীনা সরকার। সে সময় সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘জুইউয়ান যেসব কুকর্ম করেছেন সেগুলো ন্যায্য প্রতিযোগিতা ও শৃঙ্খলাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
চীন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ ও ইংলিশ ক্লাব এভারটনের সাবেক মিডফিল্ডার লি তিয়েও গত মার্চে তার সব দোষ স্বীকার করেছেন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সহায়তা করতে তিনি ১০.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিলেন।