
ঢাকা, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে।
সর্বশেষ জুনে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। শ্রীলংকা সফরে ঐ টেস্টের পর সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে টাইগারা। এসময় ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ২৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো দীর্ঘ দিন পর টেস্ট ক্রিকেটের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে কিনা টাইগাররা। পাশাপাশি ব্যাটারদের ব্যর্থতাও চিন্তায় রাখছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
সাত মাস পর টেস্ট দলে ফিরেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। গত এপ্রিলে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ টেস্টে খেলেছিলেন তিনি। সাদমান ইসলামের সাথে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে পারেন জয়। এ বছর সাদমানের টেস্ট গড় ৪০.৫৭।
বাংলাদেশের মিডল-অর্ডার সামলাবেন তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাস। আয়ারল্যান্ডের মত কম খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে হলে মোমিনুল-মুশফিক ও লিটনদের বড় ইনিংস খেলতে হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টেস্টে কোন সেঞ্চুরি নেই মোমিনুলের। অন্যদিকে ২০২২ সাল থেকে টেস্টে সেঞ্চুরি নেই লিটনের। তবে ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন মুশফিক।
গত জুনে শ্রীলংকা সফরে গল-এ প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। ৯টি চারে ১৬৩ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের ৯৯তম টেস্ট খেলতে নামবেন মুশি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে স্পিনারদের উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ। যদিও সিলেটের উইকেট পেসারদের সুবিধা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ দলে তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজের মত দু’জন কার্যকরী স্পিনার আছে। যারা আয়ারল্যান্ড ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারবেন। টেস্টে দু’জনই ২শর বেশি উইকেট শিকার করেছেন।
তাইজুল ৫৫ ম্যাচে ২৩৭ এবং মিরাজ ৫৪ ম্যাচে ২০৫ উইকেট নিয়েছেন। টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হতে ১০ উইকেট প্রয়োজন তাইজুলের। ৭১ টেস্টে ২৪৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ সামলাতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে আয়ারল্যান্ডকে। আইরিশ ব্যাটার হ্যারি টেক্টর বলেন, ‘আমার মনে হয়, বাংলাদেশের উইকেট নিয়ে দলের সবারই ভাল ধারণা আছে। কিন্তু আমার মনে হয় খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। ব্যাটাররা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে, সমস্যা হবে না। সকালের সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। ঐ সময়টা ভালভাবে কাটিয়ে দিতে পারলে ভাল কিছু হবে।’
এখন পর্যন্ত টেস্টে একবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিরপুরের ঐ টেস্টে ৭ উইকেটে জিতেছিল টাইগাররা। টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রাখেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ১২৬ এবং পরের ইনিংসে অপরাজিত ৫১ রান করেন তিনি।
২০২৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি টেস্ট খেলেছে আয়ারল্যান্ড। তিন ম্যাচই জিতেছে তারা। আফগানিস্তানকে একবার ও জিম্বাবুয়েকে ২ টেস্টে হারায় আইরিশরা। গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টেস্টে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়েকে ৬৩ রানে হারায় তারা।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মত দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামবে আয়ারল্যান্ড। এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট খেলেছিল আইরিশরা।
অন্যদিকে চলতি বছর চারটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটিতে জয়, দু’টিতে হার এবং একটি ড্র করেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, জাকের আলি, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, এবাদত হোসেন ও হাসান মুরাদ।
আয়ারল্যান্ড দল : অ্যান্ড্রু বালবার্নি (অধিনায়ক), কার্টিস ক্যাম্ফার, কেড কারমাইকেল, স্টিভেন ডোহেনি, গ্যাভিন হোয়ে, গ্রাহাম হিউম, ম্যাথু হামফ্রিজ, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, ব্যারি ম্যাককার্থি, লিয়াম ম্যাককার্থি, পল স্টার্লিং, জর্ডান নিল, হ্যারি টেক্টর, লর্কান টাকার, ক্রেইগ ইয়াং।