বাসস
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:১৪
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৭

শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য ফেভারিট কুমিল্লার

ঢাকা, ৪ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস) : মানসম্পন্ন দেশি ও বিদেশী খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়ে  কাগজে কলমে এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অন্যতম ফেভারিট কুমিল্লা। প্লেয়ার্স ড্রাফটে নিজেদের পরিকল্পনা দারুনভাবে কাজে লাগানোর পাশাপাশি  ভাগ্যেরও সহায়তা  পেয়েছে তারা।
দেশের সেরা দুই পারফরমারকে দলে নিয়েছে কুমিল্লা। এই মুহূর্তে দেশ সেরা ব্যাটার লিটন দাসের পরিবর্তে ড্রাফটের আগে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে ধরে রেখেছে তারা। ক্রিকেটের ফর্মুলায় লিটনকে ছেড়ে মুস্তাফিজকে ধরে রাখার পেছনে যৌক্তিকতা ছিল। কুমিল্লা জানে, মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ধীরগতির উইকেটে বোলিং দিয়ে নক আউট পর্বসহ বেশিরভাগ ম্যাচ জয়ের দারুন সুযোগ থাকছে। ভাগ্য সবসময় সাহসীদের পক্ষেই থাকে। প্রথম ডাক পাওয়ার সুযোগ পেয়েমফ  লিটনকে দলে পেয়ে উৎফুল্ল কুমিল্লা।
বাংলাদেশের কন্ডিশনে উইকেট বিবেচনায় নিঃসন্দেহে সেরা বোলিং অস্ত্র মুস্তাফিজ। সম্পূর্ণ ফিট এবং সেরা ছন্দে প্রতিটি ম্যাচেই যিনি পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন।
গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন লিটন। তিন ফরম্যাটে  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯২১ রান করেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪০-এর বেশি। বাংলাদেশে আর কোন ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ১৩০ ছিল না।
মাত্র দুই মাস আগেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে লিটনের ২৭ বলে ৬০ রান বিধ্বংসী ইনিংস যদিও বাংলাদেশকে জয়ের স্বাদ পাইয়ে  দিতে পারেনি। তবে তার ইনিংসটি বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বকালের সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অধিনায়ক হিসেবে দক্ষ না হলেও আশ্চর্যজনকভাবে কুমিল্লাকে দু’টি শিরোপা এনে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। ফর্ম নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও অধিনায়ক হিসেবেই দলে আছেন তিনি।
কুমিল্লার দলে সব দিক থেকে  ভারসাম্য এনে দেবেন  অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার অফ স্পিন মিরপুরের মাঠে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুবই কার্যকর হবে। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে মোসাদ্দেকই একজন, যিনি  ধীর উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে পারে এবং আক্রমণাত্মক ব্যাটও করতে পারে। সাকিব-মানের না হলেও একাদশে যদি সুযোগ হলে দলের অতিরিক্ত বোলার বা ব্যাটার হিসেবে থাকবেন তিনি।
গত বিপিএল ফাইনালে কুমিল্লার বিপক্ষে ফরচুন বরিশালের হয়ে দারুন হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন সৈকত আলী। বড় মাপের ব্যাটার না হলেও ঘরোয়া আসারে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কার্যকরী ইনিংস খেলার কারনে ইমপ্যাক্ট  খেলোয়াড় হিসাবে বিবেচনা করা হয় তাকে। হতে পারেন কুমিল্লার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।
লিটন স্পেশালিস্ট ব্যাটার হিসেবে খেলবেন বলেই দলে অতিরিক্ত দু’জন উইকেটরক্ষক রেখেছে কুমিল্লা। তারা হলেন- মহিদুল ইসলাম অংকন এবং জাকের আলী অনিক। দু’জনের মধ্যে প্রথম একাদশে সুযোগের প্রবল সম্ভাবনা অনিকের।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সব সংস্করণেই রান করেছেন অনিক। লোয়ার মিডল অর্ডারের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ভালো বিকল্প হচ্ছেন তিনি। দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ও বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনিকে। এছাড়া অফ-স্পিনার নাঈম হাসান এবং ডান হাতি পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধও দলে ভূমিকা রাখবেন।
কুমিল্লার বড় শক্তি বিদেশি তারকা ক্রিকেটাররা। সরাসরি চুক্তিতে দলে নেয়া হয়েছে পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলি, আবরার আহমেদ এবং খুশদিল শাহকে। এরমধ্যে অনিশ্চিত বাঁ-হাতি পেসার আফ্রিদি। ঢাকায় প্রথম লেগে খেলবেন না উইকেটরক্ষক-ব্যাটার রিজওয়ান। জাতীয় দলের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় অন্তত চারটি ম্যাচ মিস করবেন তিনি। অন্তত প্রথম দু’টি ম্যাচ মিস করবেন লেগ স্পিনার আবরার আহমেদও।। শুরু থেকেই পাওয়া যাবে বাঁ-হাতি ব্যাটার খুশদিল এবং ডানহাতি পেসার হাসানকে।
বিপিএলের শুরু থেকেই আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবিকে  পাচ্ছে দল । বাংলাদেশের কন্ডিশনে নবির অফ স্পিন এবং আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ্য দারুন কার্যকর। রিজওয়ান দলে যোগ না দেয়া পর্যন্ত কুমিল্লার ইনিংস শুরু করবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটন। তার আক্রমনাত্মক ব্যাটিং যেকোন বোলিং লাইনআপকে গুড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া মিডল অর্ডারের ব্যাক আপ হিসেবে জিম্বাবুয়ের শন উইলিয়ামসকেও পেয়েছে তারা।
আগামী ৬ জানুয়ারি টুর্নামেন্টের প্রথম দিন শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে খেলতে নামবে কুমিল্লা। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল :
সরাসরি চুক্তি : মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান), হাসান আলী (পাকিস্তান), খুশদিল শাহ (পাকিস্তান), মোহাম্মদ নবি (আফগানিস্তান), আবরার আহমেদ (পাকিস্তান)।
ড্রাফট থেকে স্থানীয় খেলোয়াড় : লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তানভীর ইসলাম, ইমরুল কায়েস, আশিকুর জামান, জাকের আলী অনিক, সৈকত আলী, আবু হায়দার রনি, নাঈম হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মহিদুল ইসলাম অংকন।
ড্রাফট থেকে বিদেশি খেলোয়াড় : শন উইলিয়ামস (জিম্বাবুয়ে), চাঁদউইক ওয়ালটন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।