বাসস
  ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:০৪

মিলানের বিপক্ষে ওশিমেনের  ফিরে আসার প্রার্থণায় নাপোলি

মিলান, ১১ এপ্রিল ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অল-ইতালিয়ান কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে এসি মিলানের বিরুদ্ধে নাপোলির তাদের ইন-ফর্ম ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওশিমেনের ফিটনেস নিয়ে দু:শ্চিন্তায় রয়েছে। সম্ভবত ইতালিয়ান ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম দুটি বড় ম্যাচ হতে যাচ্ছে এই কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই। বুধবার সান সিরোতে এই মুহূর্তে সিরি-এ লিগের শীর্ষে থাকা নাপোলিকে আতিথ্য দিবে মিলান। ১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে বাকি থাকা নয় ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয়ী হতে হবে দক্ষিণ ইতালির সবচেয়ে বড় ক্লাব নাপোলির। একইসাথে দারুন ছন্দে থাকা লুসিয়ানো স্পালেত্তির দলটির সামনে সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম শিরোপা জয়ের। 
শুক্রবার টেবিলের নীচের দিকে থাকা লেচ্চের বিপক্ষে ২-১ গোলের কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে নাপোলি। তাও আবার এন্টোনিও গালোসের আত্মঘাতি গোলে সফরকারী নাপোলির এ্যাওয়ে জয় নিশ্চিত হয়। আগের সপ্তাহে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মিলানের কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল নাপোলি। যে কারনে বলাই যায় কাল মাঠে নামার আগে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকবে স্পালেত্তির দলের। 
এর আগে কখনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে খেলেনি নাপোলি। তবে এবার যেভাবে তারা প্রতিযোগিতার শুরু থেকে এ পর্যন্ত এসেছে তাতে ইউরোপীয়ান ফুটবলে নতুন এক পাওয়ারহাউজ হিসেবে ইতোমধ্যেই বিবেচিত হচ্ছে। কেউ কেউ তাদেরকে ডার্ক হর্সেসের তকমাও দিয়ে দিয়েছে। 
মৌসুম যত এগিয়েছে নাপোলির ততই ওশিমেন ও কাভিটা কাভারাটসখেলিয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে সিরি-এ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ওশিমেন উরুর ইনজুরির কারনে গত দুই ম্যাচে অনুপস্থিত রয়েছে, আর এই দুই ম্যাচেই তার অনুপস্থিতি দারুনভাবে অনুভূত হয়েছে। 
লেচ্চের বিপক্ষে জয়ের পর স্পালেত্তি বলেছেন, ‘তাকে ছাড়া মাঠে নামা সত্যিই কঠিন হয়ে গেছে। কারন তার উপস্থিতি দলকে দারুনভাবে উজ্জীবিত করে তুলে। ওশিমেন নিজের গুনেই সকলকে তার দিকে আকৃষ্ট করতে পারে।’
স্পালেত্তি আশা করছেন বুধবারের ম্যাচের আগে যেন ওশিমেন সুস্থ হয়ে উঠেন। কারন তার পরিবর্তে মাঠে নামা ২৪ বছর বয়সী গিওভান্নি সিমিওনের উরুর ইনজুরির কারনে শুক্রবারের ম্যাচটিতে বদলী হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। গত মৌসুমের তুলনায় এবার অপেক্ষাকৃত ইনজুরি ফ্রি মৌসুম কাটিয়েছেন নাইজেরিয়ান তারকা ওশিমেন। আর তার ফলও পেয়ে গেছে নাপোলি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এবার তিনি এ পর্যন্ত ২৫ গোল করেছেন। সবকিছু যখন পরিকল্পনা মাফিক হয়নি তখন ওশিমেন দলকে জয় উপহার দিয়েছেন। তার কারনে মধ্যমাঠ থেকেই মিডফিল্ডাররা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছে। 
শনিবার ফ্রান্স ফুটবলে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ওশিমেন বলেছেন, ‘যখন আমি বলি যে আমি সবসময় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দলকে সামনে এগিয়ে যেতে চাপ দিতে থাকি তখন সেটা শুধুমাত্র কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনা। এই মুহূর্তে দল কিভাবে খেলছে তা সবাই দেখছে। সকলের মধ্যে আলাদা একটি ক্ষুধা তৈরী হয়েছে। যা আমার মধ্যে সবসময়ই ছিল। আর এজন্য অবশ্য কোচ স্পালেত্তি ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। তার হাতে আক্রমনভাগ কিংবা রক্ষনভাগে খুব বেশী অপশন ছিলনা, এর মধ্যেই তিনি কাজ চালিয়ে গেছেন।’
এদিকে মিলান কোচ স্টিফানো পিওলি তার মূল দলের বেশীরভাগ খেলোয়াড়ই দলে পাচ্ছেন। শুক্রবার এম্পোলির সাথে গোলশুন্য ড্র হওয়া ম্যাচটিতে তিনি ইচ্ছা করেই বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে দল সাজিয়েছিলেন। 
সান সিরোতে এ পর্যন্ত অনেক বড় বড় ইউরোপীয়ান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবারও বড় ম্যাচকে সামনে রেখে পুরো স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ হবার আশা করছে আয়োজকরা। ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মত সেমিফাইনালে লক্ষে মাঠে নামতে যাওয়া মিলান এবার আর কোনভাবেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়না। 
এম্পোলির সাথে হয়তোবা জয় পায়নি মিলান, কিন্তু পুরো ম্যাচেই ৭০ শতাংশ বলের পজিশন নিয়ে দাপট দেখিয়েছে। মৌসুমে অন্যতম বড় জয়ে নাপোলির বিপক্ষে মূল একাদশ নিয়েই হয়তো পিওলি মাঠে নামবেন। ঐ ম্যাচে যে ধরনের ম্যাচ মিলান উপহার দিয়েছে অন্তত সেটা দিতে পারলেই মিলানের জয় নিশ্চিত বলে অনেকেই মত দিয়েছে।