বাসস
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:১০

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বেইজিং সফরে রোহিঙ্গা, বাণিজ্য ঘাটতি, বিনিয়োগ ইস্যু প্রধান্য পাবে

ছবি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ঢাকা, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫ (বাসস) : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগামী ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের আসন্ন দ্বিপক্ষীয় চীন সফরকালে আলোচ্যসূচিতে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা মোকাবেলা, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং রোহিঙ্গা সমস্যা প্রধান্য পাবে।

চলতি বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী।

আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, তাই উপদেষ্টার চীন সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
 
আগামী ২১শে জানুয়ারি বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ির সাথে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, তৌহিদ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথেও কথা বলবেন এবং সফরের অংশ হিসেবে তার সাংহাই যাওয়ারও কথা রয়েছে।

মুখপাত্র বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কৃষি, শিক্ষা, বাণিজ্য এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অগ্রগতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে আলোচনা করা হবে।

সফরের অর্থনৈতিক দিক তুলে ধরে আলম উলে¬খ করেন যে, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বর্তমানে বাণিজ্যের পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাণিজ্য ভারসাম্য চীনের দিকে বেশ ভারী।

তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টার সফরের লক্ষ্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা দূর করা এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথ অন্বেষণ করা। সফরের পূর্ণাঙ্গ এজেন্ডা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

আলম বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার সম্পর্ক একটি ‘ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিতে’ রূপ লাভ করেছে, যা এর বহুমুখী বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত করে। 

মুখপাত্র বলেন, ‘আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের পর উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে আসন্ন এই সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার ও গভীর করার একটি মূল্যবান সুযোগ নিয়ে আসছে।
 
বাংলাদেশ ও চীন ২০২৫ সালে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে এবং উভয় দেশ এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আলম বলেন, এ সফর তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এ সফর বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপের রূপরেখা তৈরির সুযোগও প্রদান করবে, যার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং চলমান সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনার ওপর দৃষ্টি দেয়া হবে।’
 
জুলাই মাসে বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চীনই প্রথম ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন অব চায়না’ থেকে ১০ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রতিনিধিদল পাঠায়।

প্রতিনিধিদলটি হাসপাতাল পরিদর্শন ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছে। তারা আহত শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিয়েছে।

আলম বলেন, সফরকালে বাংলাদেশ এ বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা করতে আগ্রহী।
 
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’ এবং ‘সাংহাই ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এ বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আলম বলেন, এছাড়াও, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি উৎসাহিত করার জন্য সাংহাইয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করবেন।