শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (সিসিসি) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সরকারি ও কর্পোরেট খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য উন্নত কর্পোরেট গভর্ন্যান্স অপরিহার্য। এই কর্পোরেট গভর্ন্যান্স রক্ষার সামাজিক দায়িত্ববোধ চর্চার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারীজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য কোম্পানিগুলিতে কর্পোরেট গভর্নেন্স অনুশীলন শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শুক্রবার আইসিএসবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রামে বেস্ট ওয়েস্টার্ন সেনা কল্যাণ সংস্থায় (এসকেএস) এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইসিএসবি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম নুরুল আলম।
এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসআরএম স্টিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলি হোসাইন, কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন আহমেদ এবং আইসিএসবি কাউন্সিল সদস্য ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোসেন এবং আইসিএসবি’র কাউন্সিল সদস্য এবং ইউনিক হোটেল এন্ড রিসোর্টসের (ইউনিক গ্রুপ) পরিচালক -রেগুলেটরি এফেয়ার্স ও কোম্পানি সেক্রেটারি মো.শরীফ হাসান ।
সেমিনারে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে কর্পোরেট গভর্নেন্সের গুরুত্ব তুলে ধরে এম নুরুল আলম তার স্বাগত বক্তব্যে পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এর গুরুত্বের উপর জোর দেন এবং নৈতিক চর্চাকে উৎসাহিত করেন। কর্পোরেট সুশাসন কীভাবে জাতীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক মুক্তির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে, সেই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোসেন কর্পোরেট সুশাসনের চারটি স্তম্ভের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, কর্পোরেট খাতের রেগুলেটরি বিষয়াদি, সকল অংশীজনের জন্য সুষম ব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্রে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা ও ব্যবসা পরিচালনায় নৈতিকতা বিসর্জন না দেয়ার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের পাশাপাশি সকল খাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হওয়া এবং শেয়ার হোল্ডারদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান নিশ্চিত করার বিষয়ে আহবান জানান তিনি।
অপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক শরিফ হাসান ব্যবসা পরিচালনা ও কর্মক্ষেত্রে কর্পোরেট সুশাসনের কোন বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে বলেন, কর্পোরেট খাতে সুশাসনের অভাবে যেকোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিও যেকোন সময় ধসে যেতে পারে।
তিনি কর্পোরেট খাতের দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও ভঙ্গুর নৈতিক অবস্থানের বিষয়ে কর্পোরেট নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় চার্টার্ড সেক্রেটারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মূল প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচনায় অংশ নিয়ে আমির আলী হুসাইন কর্পোরেট গভর্ন্যান্সকে একটি অত্যাবশ্যকীয় কাঠামো বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশের কোম্পানিসমূহে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কাঠামো প্রতিষ্ঠায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন এবং পরবর্তী প্রজন্ম এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
জহির উদ্দিন আহমেদ কর্পোরেট গভর্ন্যান্স সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং স্থানীয় কোম্পানিসমূহে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ গঠনে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স একটি প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদী সফলতা ও স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি। এটি একটি কাঠামো তৈরি করতে সহায়তা করে যা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সততা, স্বাধীনতা এবং নৈতিক আচরণকে উৎসাহিত করে, এবং যা সকল অংশীজনের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করে।