
ঢাকা, ১১ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস): জাপানি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে উচ্চমূল্যের ফ্যাশনেবল পোশাক আমদানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে জাপান টেক্সটাইল ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটিআইএ) একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানানো হয়।
জেটিআইএ প্রতিনিধিদলে ছিলেন- এমএন ইন্টার-ফ্যাশন লিমিটেডের সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তোশিনা কাওয়াই, কোওয়া কোম্পানি লিমিটেডের লাইফস্টাইল বিজনেস ডিভিশনের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের আন্তর্জাতিক লজিস্টিকস সেকশনের ইসেই নোজাওয়া, তোয়োশিমা অ্যান্ড কোং লিমিটেডের ওভারসিজ অ্যাফেয়ার্স বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার শিঙ্গো ইগামী, জাপান টেক্সটাইলস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নোরিহিরো কোমিয়া এবং এআইটি কর্পোরেশনের ওসাকা সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট নম্বর-২ সেকশন-২ এর ম্যানেজার মিনামি কোজিরো
সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান (বাবলু), সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, পরিচালক ফাহিমা আক্তার, পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম, পরিচালক রুমানা রশীদ এবং পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল।
বিজিএমইএ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈঠকে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে জাপানে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষ কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন কৌশলগতভাবে বাজার বহুমুখীকরণের উপর জোর দিয়েছে এবং এক্ষেত্রে জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় বাজার।
তিনি বলেন, পোশাক শিল্প এখন মৌলিক কটনভিত্তিক পণ্য থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সিনথেটিক ফেব্রিক্স এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ভিত্তিক পোশাকে স্থানান্তরের মাধ্যমে পণ্যের অফারকে উচ্চমূল্যের বিভাগে নিয়ে যাওয়ার জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
তিনি জাপানি ক্রেতাদের প্রতি বাংলাদেশ থেকে পোশাক সোর্সিং বাড়ানোর আহ্বান জানান।
বৈঠকে জেটিআইএ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি, সামাজিক ও পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স এবং শ্রমিকের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
তারা বলেন, উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় জাপানের ক্রেতারা এখন উচ্চমূল্যের এবং ফ্যাশনেবল পণ্যের জন্য বাংলাদেশকে একটি সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে আস্থায় নিয়েছে।
আলোচনায় সাপ্লাই চেইনকে আরও মসৃণ ও দ্রুততর করার উপায়গুলো গুরুত্বসহকারে উঠে আসে। জেটিআইএ প্রতিনিধিদল উল্লেখ করেন, জাপানি ক্রেতারা সংক্ষিপ্ত লিড টাইমের মধ্যে পণ্য আমদানির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। লিড টাইম হ্রাসের সুবিধার্থে, তারা বাংলাদেশের কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন দক্ষতা আরও বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন।
বিজিএমইএ নেতারা জাপানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য জেটিআইএ প্রতিনিধিদলের সহযোগিতা কামনা করেন। এর জবাবে প্রতিনিধিদলটি জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই জাপান সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বাজার প্রবণতা সংক্রান্ত তথ্য ও গবেষণা শেয়ার করা জন্যও প্রতিনিধিদলটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৈঠকে পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের প্রভাব, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এর সম্ভাব্য প্রভাবসহ পোশাক শিল্পসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষ আলোচনা করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, উত্তরণের পরেও শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য জেটিআইএ’র মাধ্যমে জাপান সরকারের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, এই সুবিধাটি ইপিএ অথবা পিটিএ’র মতো একটি পারস্পরিকভাবে লাভজনক কাঠামোর মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে।
বৈঠকে উভয় পক্ষই পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা এবং জাপানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়াতে একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।