
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে এগিয়ে নিতে এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণে সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)। বিশেষ করে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ) বাস্তবায়ন এবং স্যানিটারি ও ফাইটো-স্যানিটারি (এসপিএস) মানদণ্ড শক্তিশালী করার মাধ্যমে এ সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে ডব্লিউটিও’র উপ-মহাপরিচালক জিয়াংচেন ঝ্যাং বলেন, বাংলাদেশ ২০১৬ সালে প্রথম দিকের এলডিসি দেশগুলোর মধ্যে টিএফএ অনুমোদন করে তার প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার প্রমাণ দিয়েছে। বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত বাণিজ্য প্রক্রিয়া উন্নয়নে তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাণিজ্য ব্যয় হ্রাসের মাধ্যমে টিএফএ বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের নতুন বাজারে প্রবেশ সহজ করে তুলছে।
ঝ্যাং আরও জানান, টিএফএ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সদস্যদেশগুলো ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট ফ্যাসিলিটি (টিএফএএফ) গঠন করেছে, যা উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা পেতে সহায়তা করে এবং টিএফএ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহায়তা লক্ষ্যভিত্তিকভাবে পৌঁছে দিতে উন্নয়ন সহযোগীদেরও সহায়তা করে।
তিনি বলেন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে টিএফএ বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান করেছে। পাশাপাশি টিএফএএফ-এর গ্রান্ট প্রোগ্রামের আওতায় উন্নয়নশীল ও এলডিসি সদস্যরা ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ মার্কিন ডলারের অনুদান পেতে পারে, যদি অন্য কোনো উন্নয়ন সহযোগীর সহায়তা না থাকে।
এসপিএস সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাজারে প্রবেশাধিকার বিষয়ে ঝ্যাং বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো, বিশেষ করে এলডিসিগুলোকে এসপিএস চুক্তি বাস্তবায়নে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ডব্লিউটিও নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ই-পিং সিস্টেম, ট্রান্সপারেন্সি চ্যাম্পিয়ন ট্রেনিং এবং চাহিদাভিত্তিক ইন-কান্ট্রি ট্রেনিং।
তিনি জানান, গত বছর এসপিএস ও টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি) চুক্তিতে বিশেষ ও প্রাধান্যপ্রাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি ঘোষণা গ্রহণ করেছে সদস্যদেশগুলো। এতে উন্নয়নশীল দেশগুলো সময়মতো প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, যাতে তারা মান বা কারিগরি নিয়মাবলি নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় মতামত দিতে পারে।
এ ছাড়া, স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড ট্রেড ডেভেলপমেন্ট ফ্যাসিলিটি (এসটিডিএফ) উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিশেষ এসপিএস প্রয়োজন পূরণে কাজ করছে। বাংলাদেশ এসটিডিএফ-এর ক্ষুদ্র চিংড়ি চাষিদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বায়োপেস্টিসাইড উন্নয়ন, বীজ বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রপ্তানিমুখী শাকসবজির এসপিএস মানদণ্ড উন্নয়নে কাজ করছে ।
বাংলাদেশ ডব্লিউটিও’র টিএফএ এবং এসপিএস চুক্তির আওতায় বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজীকরণ, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও সীমান্তে নিয়ম-অনুশাসন উন্নত করার পাশাপাশি মানব, প্রাণী ও উদ্ভিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করছে।
রপ্তানি প্রতিযোগিতা বাড়াতে দেশটি টিএফএ বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছে এবং এসপিএস-সংক্রান্ত একক তথ্যভাণ্ডার হিসেবে এসপিএস ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমও চালু করেছে।