
ঢাকা, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ, দ্রুত ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে গঠিত জাতীয় কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি বিভিন্ন দফায় কারিগরি আলোচনা ও পর্যালোচনার পর এ সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। এতে মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, মার্চেন্ট ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আইনজীবীদের মতামতও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিডা’র নির্বাহী সদস্য ও জাতীয় কমিটির প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিডা চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ উপস্থাপন করেন। উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিডা চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই কমিটি গঠিত হয়।
সুপারিশগুলোর প্রধান দিকগুলো হলো: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া অধিকাংশ অর্থ ফেরত পাঠানোর আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারে, সে জন্য অনুমোদনের সীমা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে সময় নির্ধারিত সেবা চুক্তি চালু। পুরনো ও প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথিপত্রের চাপ কমিয়ে, আন্তর্জাতিক মান অনুসারে মূল্যায়ন নির্দেশিকা হালনাগাদ করা। জটিল বা বিতর্কিত আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ পর্যালোচনা কমিটি গঠন এবং ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান বাধ্যতামূলক করা। দ্রুত বেড়ে ওঠা ব্যবসা ও নতুন উদ্যোগের জন্য আলাদা নীতিমালা ও মূল্যায়ন কাঠামো তৈরি (২০২৬ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যে)। মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স ও সনদ প্রদানের উদ্দেশ্যে দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় মূল্যায়ন সনদ কর্তৃপক্ষ গঠন এবং অনুমোদিত ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই বিষয়ে বলেন, আধুনিক এবং বিনিয়োগবান্ধব আর্থিক পরিবেশ গড়ার আমাদের যে অঙ্গীকার তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই সুপারিশসমূহে। বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নির্ভরযোগ্য ও আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এই কাঠামোটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দ্রুত সেবা নিশ্চিত করবে যেটি বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্যাকেজ স্বল্প সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করেছে। এ জন্য আমি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।