ঢাকা, ১২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে যাওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর বলে
শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়, রুতবা ইয়াসমিনের তিনদিনের একটি প্রশিক্ষণের ঘটনাকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে অবতরণ করতে যাচ্ছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাই এই তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্বে নিয়োজিত ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। ফ্যাক্টওয়াচ হল একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সত্তা। যা লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন রুতবা ইয়াসমিন। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি কেবল স্পেস নেশন আয়োজিত ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’ নামে তিনদিনের একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটি নাসার প্রাক্তন একজন মহাকাশচারীর নেতৃত্বে তিন দিনের মহাকাশ মিশন সিমুলেশন। যা সাধারণ মানুষকে বাস্তবে মহাকাশ মিশনের মতো অভিজ্ঞতা দিতে তৈরি করা হয়েছে। বাস্তবে চাঁদে অবতরণের কোনো কর্মসূচি নয়। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভাইরাল পোস্টগুলো বিভ্রান্তিকর।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে পাওয়া যায় যে রুতবা ইয়াসমিন একজন বাংলাদেশি পদার্থবিদ, প্রকৌশলী এবং মহাকাশচারী যিনি স্পেস নেশন আয়োজিত ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন ০০৪’-এ সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যম রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে তার এই প্রশিক্ষণ শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দাবি করা হয় এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রথমবার চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, স্পেস নেশন মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ মানুষকে মহাকাশের ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা এবং এমন একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি করা যেখানে পৃথিবীর যেকোনো মানুষ মহাকাশে যাওয়ার সুযোগ পায়। তাদের একটি উদ্যোগ হচ্ছে ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’। এটি তিন দিনের একটি ÔMoon Mission SimulationÕ কর্মসূচি। যা সাধারণ মানুষকে বাস্তবে মহাকাশ মিশনের মতো অভিজ্ঞতা দিতে তৈরি করা হয়েছে। চাঁদে অবতরণের বাস্তব কোনো কর্মসূচি নয়।
এটি নাসার প্রাক্তন মহাকাশচারীর নেতৃত্বে একটি শিক্ষামূলক এবং অ্যাডভেঞ্চার-ভিত্তিক, নভোচারী প্রশিক্ষণ সিমুলেশন। এর মাধ্যমে চন্দ্র অভিযানে অংশগ্রহণকারী নভোচারীদের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর সাথে বাস্তবে চাঁদে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে, রুতবা ইয়াসমিন সত্যিই চাঁদে যাচ্ছেন কি-না এ বিষয়ে নাসা বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়, 'রুতবা ইয়াসমিনের তিনদিনের একটি প্রশিক্ষণের ঘটনাকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে অবতরণ করতে যাচ্ছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাই উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’