তাইওয়ানের ‘অসাংবিধানিক’ বিলে বিরোধী আইনপ্রণেতাদের সমর্থন

বাসস
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৮
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): তাইওয়ানের বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতারা শুক্রবার একটি বিল পুনর্বিবেচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। 

তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই থেকে এএফপি জানায়, প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে-র দল এবং আইন বিশেষজ্ঞরা এই বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং স্বায়ত্ত-শাসিত দ্বীপের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে সতর্ক করেছেন।

সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ কুওমিনটাং (কেএমটি) ও তাইওয়ান পিপলস পাটি গত ডিসেম্বরে সাংবিধানিক আদালতের কার্যপ্রণালী আইন সংশোধন করে মামলা শুনানি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানদণ্ড বাড়ানোর পক্ষে ভোট দেয়।

বিলের সমালোচকরা বলছেন, এটি সাংবিধানিক আদালতকে পঙ্গু করে দিতে পারে এবং জনগণের ন্যায়বিচারের পাওয়ার সুযোগ সীমিত করতে পারে। তবে এর সমর্থকরা যুক্তি দেখাচ্ছেন যে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বর্তমান মানদণ্ড খুবই নিচু।

গত মাসে বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতারা তিনটি আইনি সংশোধনী অনুমোদন করেন। এর ফলে সংসদে হট্টগোল সৃষ্টি হয় এবং হাজারো মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নামে।

শুক্রবার আইনপ্রণেতারা ৬২-৫১ ভোটে প্রেসিডেন্ট লাই-এর মন্ত্রিসভার বিলটি পুনর্বিবেচনার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

নতুন সংশোধিত বিলটিতে সাংবিধানিক আদালতে একটি মামলা শুনানিতে অন্তত ১০ জন বিচারপতির উপস্থিতি এবং ৯ জনের সম্মতির প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করে। বর্তমানে আদালতে মাত্র ৮ জন বিচারপতি রয়েছেন, যাদের সবাই ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)’র নিযুক্ত।

সংসদ লাই-এর মনোনীত ৭ জন বিচারপতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

কেএমটি’র আইনপ্রণেতা লো চি-চিয়াং বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট লাই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং সঠিকভাবে আলোচনা করতে প্রস্তুত থাকলে কি ‘সবুজ মতাদর্শ’(ডিপিপি’র রং)-এর বাইরে দুইজন বিচারপতি খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়?’

তবে প্রধানমন্ত্রী চো জুং-তাই বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছেন, এই পরিবর্তনগুলো দেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় ‘সবচেয়ে গুরুতর ক্ষতি’ করতে পারে এবং আদালতকে ‘পঙ্গু’ করে দিতে পারে।

সংশোধিত বিলটি আইনে পরিণত করার জন্য লাই-এর কাছে পাঠানো হবে, তবে এটি কার্যকর হওয়ার আগে সাংবিধানিক আদালতে চ্যালেঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ লিন চিয়েন-চি বলেছেন, ‘আমার মতে, এটি থামানোর জন্য এটাই সেরা সাংবিধানিক উপায়।’

সাংবিধানিক আদালতের সাবেক বিচারপতি হুয়াং হর্ন-শিয়া বৃহস্পতিবার বিদেশি সাংবাদিকদের বলেন, এই পরিবর্তনগুলো ‘অন্যায্য’ ও ‘অসাংবিধানিক’।

প্রেসিডেন্ট লাই-এর ডিপিপি দল ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় এবং তাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে সমস্যার মুখে পড়ে।

বিরোধী ব্লক ডিসেম্বর মাসে যে অন্যান্য বিতর্কিত বিল পাস করেছে তার মধ্যে রয়েছে পাবলিক অফিসিয়ালস নির্বাচন ও প্রত্যাহার আইনের সংশোধন। এটি নির্বাচিত কর্মকর্তাদের অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মানদণ্ড বাড়িয়ে দেয় এবং কর-রাজস্ব বণ্টন হ্রাস করে। সরকার বলছে, এটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা বাজেটকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

গত বছর সংসদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিরোধী দলের প্রস্তাবিত সংস্কার বিল নিয়ে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ব্যাপক প্রতিবাদ দেখা দেয়।

অক্টোবরে তাইওয়ানের সাংবিধানিক আদালত আইনটির সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ বাতিল করে ডিপিপির জন্য আংশিক বিজয় নিয়ে আসে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সার্বিক বিবেচনায় দেশে ক্রান্তিকাল এখনো শেষ হয়নি : রিজভী
পোপকে শ্রদ্ধা জানাতে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা
শহীদ জাহিদের ক্যান্সার আক্রান্ত ছোট ভাই জিসানের পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান
শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন এএবি নেতৃবৃন্দ
ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ‘স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’ উপলক্ষ্যে সংবর্ধনার আয়োজন 
২০২৪ সালে আশ্রয় অনুমোদন ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে ইইউ
প্রধান উপদেষ্টার সাথে কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন চার ক্রীড়াবিদ
প্রধান উপদেষ্টার সাথে কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন চার ক্রীড়াবিদ
নেত্রকোনায় তিনদিনব্যাপী বৈশাখী লোকনাট্য উৎসব
বাংলাদেশ ও তুরস্কের অভিন্ন লক্ষ্য ন্যায়বিচার, মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: প্রধান বিচারপতি
১০