ময়নাতদন্তের ছবি নিয়ে বেদনা প্রকাশ করেছেন কেনেডি কন্যা

বাসস
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৫৬

ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : রবার্ট এফ. কেনেডির মেয়ে কেরি শনিবার ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশিত ১৯৬৮ সালে তার বাবার হত্যার পর ময়নাতদন্তের ছবি দেখে তিনি ও তার পরিবার যে ‘বেদনা’ অনুভব করেছেন তার বর্ণনা দেন।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

১৯৬০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি, তার ছোট ভাই ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ. কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের অবশিষ্ট গোপন ফাইলগুলো প্রকাশ করার জন্য জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।

শুক্রবার কিছু ফাইল প্রকাশের পর, শনিবার কেরি কেনেডি এক্স-এ এক পোস্টে এভাবে স্মরণ করা ‘কঠিন’ ও ‘অকল্পনীয়’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল স্মরণ করার সময়ই তাকে দেখব না, আমরা একটি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থেকে তার ছিন্নভিন্ন দেহের গ্রাফিক, স্পষ্ট ছবিগুলোর মুখোমুখি হব।’

ট্রাম্প জানুয়ারিতে রেকর্ড প্রকাশের নির্দেশ দেওয়ার সময় বলেন, ‘সবকিছু প্রকাশ করা হবে।’ যা ছিল হত্যাকাণ্ডের আশেপাশের ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো পরিষ্কার করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টা।

রিপাবলিকান নেতা তার প্রথম মেয়াদে প্রকাশিত আর্কাইভের একটি অংশে জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের ওপর সংশোধন গ্রহণ করেন। তিনি পরে সম্পূর্ণ রেকর্ড প্রকাশেরও প্রতিশ্রুতি দেন।

জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক (ডিএনআই) তুলসি গ্যাবার্ড শুক্রবার, এক্স-এ পোস্টে জানান, গোপন তথ্য প্রকাশের প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ও সত্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী আলোকপাত করার জন্য তিনি সম্মান বোধ করছেন । গ্যাবার্ড আরো জানান, এই সপ্তাহে প্রকাশিত রবার্ট কেনেডির সাথে সম্পর্কিত ১০ হাজার পৃষ্ঠার পরে এফবিআই ও সিআইএ ওয়্যার হাউজের অনুসন্ধানে আবিষ্কৃত আরও ৫০ হাজার পৃষ্ঠা উন্মুক্ত করা হবে।

কেনেডির ছেলে রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র বর্তমানে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তিনি এখন তার স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৬৮ সালের জুনে আরএফ কেনেডি হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয় জর্ডানে জন্মগ্রহণকারী সিরহান সিরহান (১৯৪৪)। এই মারাত্মক গুলি চালানোর বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেনেডি জুনিয়র। তিনি ট্রাম্পকে বাকি সমস্ত তথ্য প্রকাশ করার জন্যও চাপ দেন। ৪২ বছর বয়সী কেনেডিকে যে হোটেলে গুলি করা হয়েছিল, সেখান থেকে গ্রেফতার হওয়া সিরহান এখনো কারাগারে রয়েছে।

কেনেডির হত্যাকাণ্ড ঘিরে অসংখ্য প্রচলিত ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি ছিল দ্বিতীয় বন্দুকধারীর উপস্থিতির ধারণা। তবে এফবিআইয়ের এক বিশাল পর্যালোচনায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে ‘অপ্রতিরোধ্য প্রমাণ এই সত্যকে তুলে ধরে যে,  সিরহানই একমাত্র খুনি ছিল।’

কেনেডি জুনিয়র শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, তিনি আশা করেননি যে তার বাবার হত্যায় সিআইএ জড়িত থাকার মতো কোনো তত্ত্বকে সমর্থন করবে এমন কোনো ধোঁয়াশা বন্দুকের (দ্বিতীয় বন্দুক) উপস্থিতি ছিল। তিনি পোস্টের কাছে স্বীকার করেন যে, ট্রাম্প তার কাছে ময়নাতদন্তের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত হবে কিনা জানতে চেয়েছিলেন।

তবে তিনি জানান, এর জবাব বেছে নেওয়া ছিল তার কাছে ‘যন্ত্রণাদায়ক’। তবে, তিনি জানান, জনস্বার্থ পরিবারের স্বার্থের চেয়েও অগ্রাধিকার দিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে বলেছিলেন তিনি।

শুক্রবার ডিএনআই গ্যাবার্ড তাকে ‘ববি কেনেডি(কেনেডি জুনিয়র) ও তার পরিবারের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে কেরি কেনেডি, এক্স-এ তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি এটি সমর্থন করিনি।’

তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা করে বলেছেন, ‘কেনেডি পরিবারের চেয়েও অগণিত মানুষ আরো বেশি কষ্ট পাচ্ছে।’

কেরি কেনেডি বিশেষ করে এল সালভাদরে নির্বাসিত অভিবাসী, ছাঁটাই করা ফেডারেল কর্মী এবং তাদের অধিকারের জন্য ভীত ট্রান্সজেন্ডারদের দিকে ইঙ্গিত করেন।

তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো ভাবছে যে তারা আমাদের যন্ত্রণায় কবর দিবেন, কিন্তু আমরা এর থেকে উঠে দাঁড়াবো, আগের চেয়েও জোরে ও তীব্রভাবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইউনেস্কো মহাপরিচালক প্রার্থী গাব্রিয়েলা রামোস পাতিনার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় না : ধর্ম উপদেষ্টা
বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে : আসিফ নজরুল
পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার : চীনের রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা
উত্তরায় টাকাসহ ছিনতাইকারী গ্রেফতার
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ শেষে লোকালয়ে ফিরছে মৌয়ালরা
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করতে হবে: ইসলামী যুব আন্দোলন 
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নরের সাক্ষাৎ 
ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা দরকার: আমির খসরু
১০