ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশ আংশিক স্থগিত করেছেন দেশটির এক বিচারক। নির্বাচনী সংস্কারের লক্ষ্যে দেওয়া এই আদেশটি বাস্তবায়নের পথে এটি সাম্প্রতিক আরেকটি আইনি প্রতিবন্ধকতা।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, বিচারক কলিন কোলার-কটেলি রায় দিয়েছেন, এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের সময় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দিতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে পারবে না ট্রাম্প প্রশাসন।
চলতি বছরের মার্চের শেষদিকে ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এতে ডাকযোগে ভোট প্রদানের পদ্ধতিকে সীমিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়—যা ট্রাম্প বহু বছর ধরে সমালোচনা করে আসছিলেন।
আদেশটি ঘোষণার পরপরই আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। ডেমোক্রেটিক পার্টি সরাসরি আদালতে মামলা করে।
প্রাথমিক স্থগিতাদেশ জারির পক্ষে যুক্তি দিয়ে কোলার-কটেলি বলেন, মামলার মূল বিষয়গুলো পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, বাদীপক্ষের জয়ের সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি।
তিনি রায়নামায় লেখেন, ‘আমাদের সংবিধান
প্রেসিডেন্টকে নয়-- কংগ্রেস ও অঙ্গরাজ্যগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা দিয়েছে।’
তবে নির্বাহী আদেশে থাকা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—যেখানে বলা হয়েছে, ডাকযোগে ভোট প্রদানের শেষ সময় হবে নির্বাচন দিবসে ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার সময় পর্যন্ত—সেটি বাতিল করেননি কোলার-কটেলি।
যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য নাগরিক হওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সব অঙ্গরাজ্য নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জমা দিতে বলে না। অনেক রাজ্য বিকল্প যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করে।
যেসব রাজ্য এই নির্বাহী আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজ করবে না, তাদের ফেডারেল নির্বাচনী অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক রিচার্ড হ্যাসেন এই আদেশকে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এর ফলে লাখ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
চলতি বছরের মার্চে নিজের ‘ইলেকশন ল’ ব্লগে হ্যাসেন লেখেন, ‘এটি একটি নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার। ফেডারেল নির্বাচন অনেকাংশে অঙ্গরাজ্যগুলোর দায়িত্ব, কংগ্রেস শুধু নীতিমালা নির্ধারণ করে।’
ট্রাম্প এখনও ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজয় মেনে নেননি। তিনি বারবার, কিন্তু প্রমাণহীনভাবে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির দাবি করে আসছেন।
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান ট্রাম্প ইতোমধ্যে বহু নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যেগুলোর একাধিকটি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
এমনকি বৃহস্পতিবারও আরেক বিচারক অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া ‘সাংচুয়ারি শহর’গুলোর ফেডারেল তহবিল বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ স্থগিত করেছেন।