ঢাকা, ১১ মে, ২০২৫(বাসস): ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আগামী ১৫ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে সরাসরি আলোচনায় বসতে ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানান। তবে ট্রাম্প ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। কিয়েভ থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
রোববার ভোরে ক্রেমলিনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, ‘কোনো শর্ত ছাড়াই আমরা কিয়েভকে আবার আলোচনায় বসতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ইউক্রেন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডের নেতারা সোমবার থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য একযোগে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানান।
পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালে যেসব আলোচনা অমীমাংসিত রয়ে গেছে তা ফের শুরুর জন্য কিয়েভ সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।’ উল্লেখ্য, ২০২২ সালের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিকে ইস্তানবুলে সরাসরি আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
পুতিন আরো জানান, ‘আমরা দেরি না করে আগামী বৃহস্পতিবার ইস্তানবুলে ফের সংলাপ শুরু করতে চাই।’ এ আলোচনার আয়োজন করতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সহায়তা চাইবেন বলেও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন ‘আমি ইউক্রেনের সঙ্গে আন্তরিক আলোচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের মূল কারণ চিহ্নিত করে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির ভিত্তি স্থাপন করতে।’ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে ‘ডি-নাজিফাই’ করা, রুশভাষীদের নিরাপত্তা, ন্যাটোর সম্প্রসারণ রোধ ও ইউক্রেনের পশ্চিমমুখী নীতির বিরোধিতা।
তবে, কিয়েভ ও পশ্চিমারা বরাবরই এসব দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এটিকে রাশিয়ার ‘সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখলের প্রচেষ্টা’ বলেও আখ্যা দিয়েছে।
পুতিন বলেন, তিনি আলোচনায় রাজি। সম্ভব হলে পরেও যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে। তবে তিনি ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেই সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদের বিরুদ্ধে রাশিয়া বিরোধী মনোভাব ও আল্টিমেটাম দেওয়ার অভিযোগ করেন। তবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
এর কয়েক ঘণ্টা আগেই কিয়েভ সফর করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। তারা একযোগে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। সেই প্রস্তাবে সাড়া না দিলে রাশিয়াকে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন।
ম্যাক্রোঁ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোনো শর্ত ছাড়াই আগামী সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। রাশিয়া এতে সাড়া না দিলে ইউরোপ ও আমেরিকা একসঙ্গে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবে।’ ইউক্রেনের পক্ষে থাকা ২০টি দেশের নেতাদের সঙ্গে কিয়েভে ভার্চুয়াল বৈঠকও করেন ইউরোপীয় চার নেতা ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই একই ধরনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তবে রাশিয়া সেই প্রস্তাবে কখনো সাড়া দেয়নি।