ঢাকা, ১২ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ১০০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালানোর মাঝে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছ থেকে এই সপ্তাহে সরাসরি বৈঠকের জন্য প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছেন।
কিয়েভ থেকে এএফপি জানায়, ইউক্রেন ও তার মিত্ররা মস্কোর কাছে অবিলম্বে একটি ৩০ দিনের পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিল, কিন্তু পুতিন এর পাল্টা প্রস্তাবে বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি আলোচনা করার প্রস্তাব দেন।
জেলেনস্কি পুতিনের প্রস্তাব মেনে নিয়ে বলেছেন, তিনি ‘বৃহস্পতিবার তুরস্কে পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাতের অপেক্ষা করবেন।’
২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণের পর প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবকে ওয়াশিংটন ও ইউরোপে স্বাগত জানানো হয়েছে। তবে মস্কো সম্ভবত যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ড্রোন হামলার মাধ্যমে তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, ‘১১ মে রাত ১১টা থেকে শত্রু পক্ষ ১০৮টি শাহীদ ও অন্যান্য প্রকারের ড্রোন হামলা করেছে। রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৫৫টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।’
এই হামলায় পূর্ব ইউক্রেনে একজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছে, রেলপথ এবং আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের জাতীয় রেলপথ অপারেটর উক্রজালিজনিতসিয়া জানিয়েছে, ‘যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষিত হচ্ছে, এবং শত্রু রেলপথের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় পক্ষ থেকে সমঝোতা না দেখলে শান্তিচুক্তি মধ্যস্থতা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন। তিনি অবিলম্বে বসে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চান না, তবে তিনি বৃহস্পতিবার তুরস্কে বসে আলোচনা করতে চান।’
‘মূল কারণ’
রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনী বর্তমানে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার দখলে রয়েছে।
পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা হলে সেটি যুদ্ধের ‘মূল কারণ’ সম্পর্কে হতে হবে এবং তিনি ‘যেকোনো আলোচনার পর যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা’ উড়িয়ে দেননি।
রাশিয়ার উত্থাপিত ‘মূল কারণ’লো সাধারণত ইউক্রেন ও পশ্চিমের প্রতি রাশিয়ার অভিযোগ, যা তারা তাদের আক্রমণের যৌক্তিকতা হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
ইউক্রেন ও পশ্চিমে এ দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলছে রাশিয়ার আক্রমণের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একটি সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখল।
ইউক্রেন ও রাশিয়া কর্মকর্তারা মার্চ ২০২২ সালে ইস্তাম্বুলে আলোচনা করলেও কোনো সমঝোতা হয়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মানির ফ্রিডরিশ সরাসরি আলোচনা সম্ভবনা স্বাগত জানালেও প্রথমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি চেয়েছেন।
মের্ৎস বলেন, ‘প্রথমে অস্ত্র ব্যবহার থামাতে হবে, তারপর আলোচনা শুরু হতে পারে।’
চীনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার মূল মিত্র হিসাবে সোমবার ‘সব পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য একটি বাধ্যতামূলক শান্তিচুক্তি’র আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফ্রন্টলাইনগুলোতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি ছোট গ্রাম দখল করেছে, এবং মস্কো-সমর্থিত কর্তৃপক্ষ বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলের রুশ-অধিকারিত অংশে চারজন নিহত হয়েছেন।