ঢাকা, ১২ মে, ২০২৫ (বাসস): সুদানজুড়ে চলমান সংঘাতের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)’র বিরুদ্ধে দেশটির প্যারামিলিটারি বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ ওঠার পর আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) সোমবার বলেছে, তারা সুদানে ‘কোনো হস্তক্ষেপই গ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করে না।
আদ্দিস আবাবা থেকে এএফপি জানায়, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি, আর এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব আফ্রিকা ও আশপাশের অঞ্চলজুড়ে।
গত সপ্তাহে সুদান সরকার আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তুলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও জানিয়েছে, জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে আরএসএফকে অস্ত্র দিয়েছে ইউএই। তবে আবুধাবি এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এইউ কমিশনের চেয়ারপারসন মাহামুদ আলী ইউসুফ বলেন, ‘কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট- সদস্য রাষ্ট্রগুলো সার্বভৌম, এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশন সুদানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ গ্রহণ করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো হস্তক্ষেপ বা বিদেশি হস্তক্ষেপ সমর্থন করব না।’
তবে ইউএই-র ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইউসুফ বলেন, ‘এটা আমাদের কাজ নয়; সুদান আমিরাতকে অভিযুক্ত করেছে, প্রমাণ দেওয়ার দায়িত্বও তাদের।’
ডিজিবুতির সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্যান-আফ্রিকান সংগঠনটির প্রধান নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তার অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সুদানের গৃহযুদ্ধ, যা দেশটিকে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে।
বর্তমানে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে দেশটির মধ্য, পূর্ব ও উত্তরাঞ্চল, আর পশ্চিমের দারফুর ও দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে আরএসএফ ও তাদের মিত্ররা।
উভয় পক্ষকেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ড্রোন হামলার মাত্রা বেড়েছে এবং এতে আরএসএফ জড়িত। দুই বছর ধরে চলা এ সংঘাতে এটি একটি মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত হয়ে উঠছে।
ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে পোর্ট সুদান, যা বর্তমানে সরকারি কার্যক্রমের অস্থায়ী কেন্দ্র এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সরবরাহ কেন্দ্র।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সুদানে অস্ত্র প্রবাহ বন্ধের আহ্বান জানান।