ঢাকা, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘের বিমান সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, গত ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি জেটলাইনার বিমান ভূপাতিত করার জন্য রাশিয়া দায়ী ছিল। বিমানটি ভূপাতিত করার ফলে ২৯৮ জন আরোহী নিহত হয়েছিল।
মন্ট্রিল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
মন্ট্রলে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইসিএও) বলেছে, ১৭ জুলাই ফ্লাইট এমএইচ১৭ ভূপাতিত করার ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডসের দাবি ‘বাস্তবতা এবং আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে সুপ্রতিষ্ঠিত’।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জারি করা এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘গত ২০১৪ সালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ ১৭ ভূপাতিত করার ক্ষেত্রে রাশিয়ান ফেডারেশন আন্তর্জাতিক বিমান আইনের অধীনে তার বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’
আইসিএও জানিয়েছে, তাদের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো তাদের কাউন্সিল সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিরোধের যোগ্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২০১৪ সালের ১৭ জুলাইয়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। ওই সময় ওখানে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীরা ইউক্রেনীয় বাহিনীর সাথে লড়াই চলছিল।
বিমানটি রাশিয়ার তৈরি মিসাইল ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়।
নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশ ছিলেন ডাচ নাগরিক, ৩৮ জন অস্ট্রেলিয়ান এবং প্রায় ৩০ জন মালয়েশিয়ান। যাদের অনেকেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল।
তৎকালীন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো এটিকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এলাকার রাশিয়ানপন্থী বিদ্রোহীরা দাবি করেছিলেন বিমানটি একটি ইউক্রেনীয় সামরিক জেট কর্তৃক গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
গত ২০২২ সালে একটি ডাচ আদালত বিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়, যার মধ্যে দুজন রাশিয়ানও ছিলেন, কিন্তু রাশিয়া তাদের হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
রাশিয়া ধারাবাহিকভাবে এই ট্র্যাজেডিতে কোনও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে।
অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডস সরকার সোমবার রাতে জাতিসংঘের সংস্থার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ফ্লাইট এমএইচ১৭ বিধ্বস্তের শিকার ব্যক্তিদের এবং তাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের জন্য সত্য, ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার সন্ধানে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’