ঢাকা, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : মিয়ানমারে সোমবার একটি স্কুলে জান্তার এক বিমান হামলায় ২০ শিশুসহ ২২ জন নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে দেপেইন থেকে এএফপি এ তথ্য জানায়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়ার দেশটিকে ভয়াবহ ভূমিকম্প থেকে পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য ঘোষিত মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই জান্তা এই হামলা চালায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত থেইন কুইন গ্রামের একটি স্কুলে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এই হামলা চালানো হয়।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, এই হামলার খবরে তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘স্কুলগুলো এমন এলাকায় থাকতে হবে, যেখানে শিশুদের শেখার জন্য নিরাপদ জায়গা থাকবে। তারা বোমা হামলার শিকার হবে না।’
সোমবার বিকেলে বোমার আঘাতে স্কুল ভবনটি ভেঙে পড়লে এর ধাতব ছাদ টুকরো টুকরো হয়ে যায় ও ইটের দেয়াল ভেঙে ফাঁকা গর্ত তৈরি করে। বাইরে মিয়ানমারের পতাকা উড়ানো একটি খুঁটির সামনে এক ডজনেরও বেশি পরিত্যক্ত বইয়ের ব্যাগ স্তূপকৃত পড়ে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের ৩৪ বছর বয়সী একজন শিক্ষক জানান, ‘এখন পর্যন্ত ২০ শিশু ও দুইজন শিক্ষকসহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শিশুদের ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু যুদ্ধবিমানটি অনেক দ্রুতগতিতে বোমা ফেলে দেয়।’
সাগাইং অঞ্চলের গ্রামের একজন শিক্ষা কর্মকর্তা একই সংখ্যা জানিয়েছেন।
তবে জান্তা সরকার হামলার খবরকে ‘বানোয়াট’ বলে উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে কোনও বিমান হামলা হয়নি।’
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চলতি মে মাসজুড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল গত ২৮ মার্চের ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৩ হাজার ৮০০ জন নিহত হন। তবে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
২০২১ সালে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। একদিকে জান্তা বাহিনী ও অন্যদিকে বেশ ক’টি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে, জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে ১৭১টি বিমান হামলাসহ কমপক্ষে ২৪৩টি সামরিক হামলায় দুই শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।