যুক্তরাজ্য-ইইউ প্রতিরক্ষা চুক্তি পুনর্গঠনে জোর তৎপরতা, আলোচনায় অচলাবস্থা

বাসস
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৪:৪২

ঢাকা, ১৬ মে, ২০২৫ (বাসস) : আগামী সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় এক ঐতিহাসিক সম্মেলনে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে জেলাভিত্তিক মাছ ধরা ও খাদ্য রপ্তানির মান যাচাইসংক্রান্ত পুরোনো বিরোধ নতুন করে আলোচনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে।

ব্রাসেলস থেকে এএফপি জানায়, এই সম্মেলনটি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ও ইইউ নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ের এটিই প্রথম উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে দীর্ঘকালীন দূরত্ব কাটিয়ে সম্পর্ক পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে বসছে দুই পক্ষ।

প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব গঠনের বিষয়ে আশাবাদী উভয়পক্ষ। ইইউ ও যুক্তরাজ্য উভয়ই ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নির্লিপ্ততার আশঙ্কা থেকে ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদারে একমত। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ব্রিটেন ইইউ সামরিক মিশন ও উদ্যোগে অংশ নিতে পারবে এবং ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা সম্প্রসারিত হবে।

তবে ব্রাসেলসভিত্তিক কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, আলোচনার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মাছ ধরার অধিকার নিয়ে দর কষাকষি। ইইউ চায়, ইউরোপীয় জেলেদের জন্য ব্রিটিশ জলসীমায় প্রবেশাধিকার বজায় থাকুক; বিনিময়ে ব্রাসেলস যুক্তরাজ্য থেকে খাদ্য রপ্তানিতে কিছু নিয়ম শিথিল করতে পারে।

অন্যদিকে ইইউ তরুণদের জন্য প্রস্তাবিত গতিশীলতা কর্মসূচি নিয়েও মতবিরোধ রয়ে গেছে। ইইউ চায়, ১৮-৩০ বছর বয়সী যুবকদের জন্য কাজ ও অধ্যয়নের সুযোগ উন্মুক্ত করা হোক। তবে লন্ডন উদ্বিগ্ন—এটি আবারও ‘মুক্ত চলাচল’-এর পথে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে।

একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক ব্রিটিশ অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'তারা সবকিছু চায়, কিন্তু কিছুই দিতে রাজি নয়।'

তবে আশাবাদ প্রকাশ করে আরেকজন বলেন, "এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি মূলত সহযোগিতার ভিত্তিপ্রস্তর। এখনই সবকিছু চূড়ান্ত হবে না, তবে কাঠামো স্থাপিত হবে।"

চুক্তির আওতায় নিয়মিত নিরাপত্তা সংলাপ, ইইউ সামরিক মিশনে ব্রিটিশ অংশগ্রহণ এবং ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা তহবিলে যুক্তরাজ্যের প্রবেশাধিকার অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে। তবে এই তহবিল পুরোপুরি উন্মুক্ত করতে হলে ভবিষ্যতে আরও পৃথক সমঝোতা প্রয়োজন হবে।

একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা জানান, এই সম্মেলন ভবিষ্যতের ধারাবাহিক বৈঠকের সূচনা মাত্র। তিনি বলেন, 'এখানে কিছু বিষয়ে চুক্তি হবে, কিছু আলোচনা চলবে, আর কিছু বিষয় এ যাত্রায় অনিষ্পন্নই থেকে যাবে।'

সম্মেলনের সময় আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রকাশিত হবে—একটি বৈশ্বিক ইস্যুতে যৌথ অবস্থান নির্দেশ করবে এবং অন্যটি ভবিষ্যতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনা করার বিষয়গুলোর তালিকা উপস্থাপন করবে।

যদিও স্টারমার সরকারের জন্য ইইউ-সংশ্লিষ্ট যেকোনো পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল, তবুও নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার মতো বাস্তব ক্ষেত্রগুলোতে ঐক্যমত্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে
টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
সুন্দরবনে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান : হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ
উজবেকিস্তানের দুই মন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
এইচএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতির একটি কারণ বাল্যবিবাহ : শিক্ষা উপদেষ্টা
ট্যানারী মালিকদের অভিযোগ সঠিক নয় : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
এবারের নির্বাচন হবে আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে : গোলাম পরওয়ার
গাজীপুরে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে মা-ছেলেসহ ৩ জন নিহত
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ’ এর গেজেট প্রকাশ
চট্টগ্রামে আত্মরক্ষায় মার্শাল আর্ট শিখছে জেলা পুলিশ
১০