ঢাকা, ২০ মে, ২০২৫ (বাসস) : খার্তুমের যমজ শহর ওমদুরমানে মঙ্গলবার সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সে (আরএসএফ)-এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই লড়াইকে ‘বড় আকারের’ আক্রমণাত্মক অভিযানের অংশ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
খার্তুম থেকে এএফপি জানায়, ঘটনাস্থলে থাকা একজন এএফপি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, মার্চ মাসে রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর আরএসএফ যে এলাকায় পিছু হটে যায়, সেই এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, তাদের অভিযানের লক্ষ্য ছিল খার্তুম রাজ্যে তাদের অবস্থান থেকে আধাসামরিক বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়া। ২০২৩ সালের এপ্রিল সামরিক মুখপাত্র নাবিল আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন। থেকে তারা তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে।
সামরিক মুখপাত্র নাবিল আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা একটি বড় আকারের অভিযান চালাচ্ছি। আমরা পুরো খার্তুম রাজ্যকে গুন্ডাদের হাত থেকে মুক্ত করার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’
সুদানের কার্যত নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীকে তার সাবেক ডেপুটি মোহাম্মদ হামদান দাগলোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফের বিরুদ্ধে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি, আরএসএফ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের অবস্থান পোর্ট সুদানে একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের সুদান বিষয়ক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ রাদৌয়ান নুইসার বলেছেন, ‘এই ড্রোন হামলা সংঘাতের মাত্রা বড় ধরনের বৃদ্ধি করেছে, যা বেসামরিক সুরক্ষার ওপর উদ্বেগজনক প্রভাব ফেলেবে।’
‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর বারবার আক্রমণ বেসামরিক জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে, মানবিক সংকটকে আরও খারাপ করে এবং মৌলিক মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।’
নউইসার আরও বলেন, ড্রোন হামলা প্রায়শই জনবহুল এলাকা এবং পোর্ট সুদানের বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে করা হয়।
জাতিসংঘের মতে, এই যুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের সূত্রপাত করেছে।
এটি কার্যকরভাবে দেশটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে, উত্তর, পূর্ব এবং কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছে সেনাবাহিনী, অপরদিকে আরএসএফ প্রায় সমস্ত দারফুর এবং দক্ষিণের কিছু অংশে আধিপত্য বিস্তার করছে।
লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করার পাশাপাশি, দুই বছরের এই সংঘাতে ১ কোটি ৩০ লক্ষাধিক মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যুদ্ধের ফলে সুদানের ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভঙ্গুর পর্যায়ে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক ইউনিয়ন জানায়, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় হামলা, বোমা হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে। যুদ্ধের কারণে দেশের ৯০ শতাংশ হাসপাতাল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটিতে নারী ও মেয়েরা গণধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং হত্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে আধাসামরিক বাহিনীর হাতে তারা নির্যাতিত হচ্ছে।