গনোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশ্বে প্রথম’ টিকাদান কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড

বাসস
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৭:৩৭
গনোরিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার কম্পিউটার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ২১ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বুধবার গনোরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম টিকাদান কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দিয়েছে। যৌনবাহিত এই রোগটির সংক্রমণ রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

লন্ডন থেকে এএফপি জানায়, ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডে গনোরিয়ার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়—যা ১৯১৮ সালে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরুর পর সর্বোচ্চ। চিকিৎসকেরা সতর্ক করেছেন, এই ব্যাধির অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষমতা ক্রমশ বাড়ছে।

যুক্তরাজ্যের এইচআইভি ও যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান দাতব্য সংস্থা ‘টেরেন্স হিগিন্স ট্রাস্ট’-এর প্রধান নির্বাহী রিচার্ড অ্যাঙ্গেল এই উদ্যোগকে একটি ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একাই গনোরিয়ার নতুন সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে।’

রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্থায়িত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর প্রধান আমান্ডা ডয়েল জানান, এটি হবে বিশ্বের প্রথম নিয়মিত গনোরিয়া টিকাদান কর্মসূচি।

এনএইচএস-এর প্রাথমিক ও কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা পরিচালক এটিকে যৌনস্বাস্থ্য খাতে একটি ‘বড় অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি গনোরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী স্ট্রেইনের বাড়তি হারের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সহায়তা করবে।

এই কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত হবে ৪সিএমেনবি (৪ঈগবহই) নামের একটি বিদ্যমান টিকা, যা সাধারণত শিশুদের মেনিনজোকক্কাল-বি রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি গুরুতর ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যা মেনিনজাইটিস এবং সেপসিসের কারণ হতে পারে।

৪সিএমেনবি টিকাটি বর্তমানে শিশুদের ৮ সপ্তাহ, ১৬ সপ্তাহ ও এক বছর বয়সে দেওয়া হয়।

নতুন কর্মসূচির আওতায় এটি গনোরিয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের—বিশেষত সমকামী ও উভকামী পুরুষদের, যাদের সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক যৌনসঙ্গী ছিলেন বা যারা ব্যাকটেরিয়াজনিত যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দেওয়া হবে।

এনএইচএস-এর পরামর্শক মহামারিবিদ সেমা মান্ডাল বলেন, ‘যখন আমরা গনোরিয়ার অত্যন্ত উদ্বেগজনক সংক্রমণ হার, বিশেষত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী গনোরিয়া দেখছি, তখন এই টিকাদান কর্মসূচিটি একটি অত্যন্ত জরুরি হস্তক্ষেপ।’

যুক্তরাজ্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থার (ইউকেএইচএসএ) উপপরিচালক হিসেবে তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালে গনোরিয়ার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯১৮ সালের পর সর্বোচ্চ ছিল।

এই টিকাদান কার্যক্রম চলাকালে রোগীদের এমপক্স, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি), হেপাটাইটিস এ এবং বি-এর টিকাও দেওয়া হবে।

দীর্ঘ সময় ধরেই গনোরিয়া এবং সিফিলিসকে ভিক্টোরিয়ান যুগের রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যা আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা ও রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রায় নির্মূল হয়েছিল।

তবে গনোরিয়ার মতো সিফিলিস সংক্রমণের হারও আবার বাড়তে শুরু করেছে। ২০২৩ সালে সিফিলিসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯,৫১৩—যা আগের বছরের তুলনায় নয় শতাংশের বেশি এবং ১৯৪৮ সালের পর সর্বোচ্চ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ আর নেই
জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারত করলেন বেগম খালেদা জিয়া
‘নতুন কুঁড়ি’ ঢাকা পর্বে রাজশাহীর ১২০ প্রতিযোগী মনোনীত
শ্রমিকদের বেতন-মজুরি প্রদানের দায়িত্ব মালিকদের: শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা
আগামী নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে গোপনীয়তা অটুট থাকবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় আট বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত
গুমের সত্য উন্মোচনে প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করল গুম কমিশন
সরকার দেশের কর ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ ও ব্যবসা বান্ধব করতে কাজ করছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
ফিলিস্তিনিদের অদম্য স্পৃহা একদিন তাঁদের মুক্তি এনে দেবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
সুরের মূর্ছনায় লালবাগ কেল্লায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন
১০