ঢাকা, ২৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : প্যারিসে মার্কিন রিয়েলিটি টিভি তারকা কিম কার্দাশিয়ানকে গত ২০১৬ সালে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কার্দাশিয়ানের কাছ থেকে ১ কোটি ডলার মূল্যের গহনা লুটের মামলার রায় আজ শুক্রবার রায় ঘোষণা করবে ফ্রান্সের একটি আদালত।
প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সাড়ে তিন কোটি ডলারের অলংকার লুটের মামলায় সন্দেহভাজন মূল হোতা আমর আইত গহনা ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। এদের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে সরাসরি ডাকাতির অভিযোগে ১০ বছরের সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের কারাদণ্ডের দাবি করছেন প্রসিকিউশন। এপ্রিল মাস থেকে তাদের বিচার চলছে।
গত ২০১৬ সালের ২-৩ অক্টোবর রাতে, ৩৫ বছর বয়সী কার্দাশিয়ান প্যারিসের একটি বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থানকালে কার্দাশিয়ানকে অস্ত্রের রে মুখে টেপ সেঁটে এবং হাত বেঁধে তার মূল্যবান গহনা লুট করে অভিযুক্তরা।
লুট হওয়া গহনার মধ্যে ছিল একটি হীরার আংটি, যা কার্দাশিয়ানকে উপহার দিয়েছিলেন তার তৎকালীন স্বামী, র্যাপার কানিয়ে ওয়েস্ট। যেটির মূল্য ছিল প্রায় ৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার।
লুট হওয়া গহনার অধিকাংশাই পরে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্তদের অনেকেই এখন ষাট কিংবা সত্তর বছরের বৃদ্ধ। ফরাসি মিডিয়ায় তারা ‘গ্র্যান্ডপা রবার্স’ নামেও পরিচিতি । অনেকে ‘ওল্ড ওমার’ বা ‘ব্লু আইস’-এর মতো ছদ্মনামেও পরিচিত ছিলেন অপরাধ জগতে।
আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কার্দাশিয়ান বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো ধর্ষণ বা হত্যা করা হবে। আমি ধরেই নিয়েছিলাম, মরে যাচ্ছি।’
প্রধান অভিযুক্ত ৬৯ বছর বয়সী আমর আইত খেদাচে একাধারে বধির ও প্রায় বোবা। তিনি আদালতে স্বীকার করেন, কার্দাশিয়ানকে তিনিই বেঁধেছিলেন, তবে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী নন বলে দাবি করেন। আদালতে তার পক্ষে পাঠানো ক্ষমাপ্রার্থনার চিঠির জবাবে কার্দাশিয়ান বলেন, ‘ঘটনাটি যাই হোক, আমি আপনাকে ক্ষমা করেছি। তবে এতে আমার অনুভূতি, আবেগ, মানসিক ট্রমা এবং আমার জীবনে যে পরিবর্তন এসেছে, তা একটুও বদলাবে না’ ।
আরেক অভিযুক্ত ইউনিস আব্বাস ডাকাতি নিয়ে ‘আই কিডন্যাপড কিম কার্দাশিয়ান’ নামে একটি বইও লিখেছেন। বইতে তিনি লিখেছেন, পালানোর সময় তার সাইকেলের চাকার সঙ্গে ব্যাগ আটকে কিভাবে গহনা ছিটকে পড়ে গিয়েছিলো।
অন্যদিকে খেদাশ সম্পূর্ণ বধির ও প্রায় নিশ্চুপ। এমন একটি শারীরিক অবস্থায় আছেন, যার ফলে প্রতি ঘণ্টায় একবার করে টয়লেটে যেতে হয় এবং তিনি ধীরে ধীরে লাঠির ভর দিয়ে। গত এপ্রিলে আব্বাস আদালতকে জানান বলেন, ডাকাতির ঘটনার তিনি ‘পুরোপুরি অনুতপ্ত’। পারকিনসন রোগে ভোগা এই আসমি আরো জানান, কার্দাশিয়ানের কাছ থেকে ডাকাতি করা ছিল তার জীবনের এমন এক ‘অতিরিক্ত কাজ’, যা নিজের ভুল বুঝতে সহায়তা করেছে।
যদিও বৃহস্পতিবার আসামিদের আইনজীবীরা আদালতের কাছে অনুরোধ করেন, যেন বয়স বিবেচনায় তাদের কারাদণ্ড থেকে বিরত রাখা হয়। খেদাচের আইনজীবী বলেন, ‘এই বয়সে কারাদণ্ড মানে আজীবন সাজা।’
কার্দাশিয়ান বলেন, এই ঘটনা নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। ‘এখন আমার ঘরেই নিজেকে নিরাপদ মনে হয় না,’ বলেন তিনি। বর্তমানে তার বাড়িতে সবসময় ৬ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত আছেন।