ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির পর বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে আছেন এবং কয়েক হাজার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে সিডনি থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার রাজ্যজুড়ে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও ২০টিরও বেশি জরুরি সতর্কতা জারি ছিল। এখন জরুরি পরিষেবাগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ি পরিদর্শন এবং বিচ্ছিন্ন জনপদে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।
সরকার জানিয়েছে, প্রায় ১০,০০০টি বাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে। এখন জরুরি কর্মকর্তারা সেসব এলাকার পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে খাবার ও জরুরি সামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছেন।
রাজ্যের জরুরি সেবা ব্যবস্থাপনার প্রধান পল ম্যাককুইন বলেন, “আমরা স্থল, জল এবং আকাশপথে সাহায্য পাঠাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করছি, নিরাপদে থাকুন, বন্যার পানিতে গাড়ি চালাবেন না বা ঘুরতে বের হবেন না।”
বন্যায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ এক ৮০ বছরের বৃদ্ধের মৃতদেহ পাওয়া গেছে টারি শহরের একটি বাড়ি থেকে, যা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজে টারি সফরের পরিকল্পনা করলেও রাস্তাঘাট বিপজ্জনক হওয়ায় তিনি যেতে পারেননি। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “বন্যা পরিস্থিতি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি যাতে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রয়োজনীয় সাহায্য পায়।”
গত তিন দিনে ৬০০ জনকে বন্যার হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্যের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস বলেন, “জরুরি কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ না করলে আরো অনেক প্রাণহানি ঘটত।”
জরুরি ব্যবস্থাপনা সেবার উপকমিশনার ড্যানিয়েল অস্টিন বলেন, আশা করা হচ্ছে সপ্তাহ শেষে সতর্কতার সংখ্যা কমে আসবে।
বন্যার পানি কমে এলেও অনেক এলাকায় এখনো বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, স্থির পানিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে এবং ইঁদুর, সাপসহ নানা ক্ষতিকর প্রাণী ঘরে ঢুকে পড়তে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরোর মতে, মাত্র তিন দিনে ছয় মাসের সমান বৃষ্টি হয়েছে, যা অনেক এলাকায় বৃষ্টির রেকর্ড ভেঙেছে।