যুক্তরাষ্ট্র এখন বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ নয় 

বাসস
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ১০:২০

ঢাকা, ৮ জুন, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্র এখন আর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান কারমিগনাকের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাফায়েল গ্যালার্দো। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বিলকেই তিনি এর মূল কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।

গত শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্যালার্দো বলেছেন, ‘আমেরিকা এখন বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন করনীতি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে।’

বিশেষ করে বিলের ৮৯৯ নম্বর ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। ওই ধারায় বলা হয়েছে, যেসব দেশের করনীতি যুক্তরাষ্ট্র ‘বৈষম্যমূলক’ মনে করবে, তাদের ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা হবে। এই ধারা অনেকেই ‘প্রতিশোধমূলক কর’ বলে অভিহিত করছেন।

২০২৪ সালে প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কারমিগনাক বলেছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আসলে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ থেকে ‘বৈশ্বিক আর্থিক বিশৃঙ্খলার’ পথে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বিল ঘোষণার পর থেকেই ডলারের মান কমতে শুরু করেছে। মার্কিন শেয়ারবাজারে ধসের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তাই তারা গ্রাহকদের মার্কিন বাজার থেকে বিনিয়োগ কমিয়ে ইউরোপের দিকে বিশেষ করে জার্মানিতে সম্পদ সরানোর পরামর্শ দিয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকরাও বলছেন, ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি ও দেশটির আর্থিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জার্মান আর্থিক প্রতিষ্ঠান অ্যালিয়ান্স এসইয়ের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা লুডোভিক সুব্রান জানান, ট্রাম্পের করনীতির কারণে ডলারের মান ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে এবং মার্কিন শেয়ারবাজারে ১০ শতাংশ পর্যন্ত পতনের আশঙ্কা রয়েছে।

গ্যালার্দো বলেছেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্য, পররাষ্ট্রনীতি এবং আইনের শাসন নিয়ে ট্রাম্পের আচরণ পুরনো মিত্রদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করছে। আমেরিকা এখন অনিশ্চিত ও অবিশ্বস্ত সামরিক মিত্রে পরিণত হয়েছে।’

তিনি মনে করেন, বর্তমান বাস্তবতায় দেশগুলোর উচিত নিজস্ব সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং নতুন বাজারে নজর দেওয়া।

ফলে কারমিগনাক এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিনিয়োগ কমিয়ে ইউরোপের দিকে ঝুঁকছে। জার্মানিতে সাম্প্রতিক সংস্কার বিনিয়োগকারীদের আশা জাগিয়েছে।

চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্জ সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও করপোরেট কর হ্রাসের মাধ্যমে জার্মান অর্থনীতিকে চাঙা করার নীতি গ্রহণ করেছেন।

গ্যালার্দো বলেছেন, ‘ট্রাম্প এমন কিছু করেছেন যা আগে কেউ পারেনি-তিনি জার্মানদের খরচ করতে বাধ্য করেছেন। একসময় যারা যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করত, তারা এখন নিজেদের দেশেই ব্যয় করছে।’

কারমিগনাক গত বছর বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতির পূর্বাভাস দিলেও এবার বিনিয়োগকারীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

তবে ইউরোপীয় বাজার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। মে মাসের শেষ নাগাদ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি স্টক সূচকের মধ্যে আটটিই ছিল ইউরোপীয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে : রিজভী
জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের দাবি, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন : প্রেস উইং
মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত একই পরিবারের ৪ জন
নড়াইলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা
একাত্তর ও জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যাকারীদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে : ওয়ার্কার্স পার্টি
বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রচারে লিফলেট বিতরণ দক্ষিণখানে
৯৭২২ দিনের অপেক্ষার অবসান দক্ষিণ আফ্রিকার
সাহিত্যিক আব্দুল মোমেনের মৃত্যুতে জামায়াতের শোক
আগামীকাল উদীচীর বর্ষা উৎসব
সোমবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
১০