ঢাকা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইরান শনিবার কূটনৈতিক সমাধানের পথে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত দিয়ে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ)’র সঙ্গে তাদের সহযোগিতা ‘নতুন রূপে’ চালু হবে।
গত মাসে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের ফলে তেহরান ও জাতিসংঘ পরমাণু সংস্থার সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে ওঠে।
তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা পুনরারম্ভের লক্ষ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ঠিক তার আগেই ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাসহ আবাসিক এলাকাতেও হামলা চালায়। হামলার পর সেই আলোচনা থেমে যায়।
তেহরান থেকে এএফপি জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি শনিবার বলেন, ‘আইএইএ’র সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি, তবে এটি এখন থেকে নতুন রূপে চলবে।’
তিনি জানান, জুলাইয়ের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার পর সাইট পর্যবেক্ষণের অনুরোধগুলো ‘কেস-বাই-কেস’ ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে, এবং এটি ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
আলাপ-আলোচনার বিষয়ে আরাকচি বলেন, ‘কোনো বৈঠকের আগে আমরা সময়, স্থান, কাঠামো, বিষয়বস্তু ও প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা সবকিছুই খতিয়ে দেখছি।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আলোচনার বিষয় শুধুমাত্র পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে তাতে আন্তর্জাতিক আস্থা স্থাপন হবে। ‘সামরিক সক্ষমতা আলোচনার বিষয় নয়। অন্য কোনো বিষয় আলোচনার মধ্যে আসবে না।’
আরাকচি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যে কোনো চুক্তিতেই ইরানি জনগণের পরমাণু অধিকার, বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির অধিকার স্বীকৃত হতে হবে। এই অধিকার ছাড়া কোনো চুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।’
ইউরোপের হুমকির মুখে তিনি সতর্ক করেন, ‘যদি আবার জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, তবে সেটি ইউরোপের ভূমিকার অবসান ঘটাবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে একটি ধারা রয়েছে যা অনুসারে চুক্তিভঙ্গ করলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
এদিকে, রিওতে ব্রিকস সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘রাশিয়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে প্রতিশ্রুতিশীল মিত্র হিসেবে থাকবে।’
তিনি আরও জানান, ‘রাশিয়ার কাছে ইউরেনিয়াম হ্রাস করার প্রযুক্তিগত সমাধান রয়েছে এবং তারা এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’