ঢাকা, ১৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় জ্বালানি সংকট ‘ভয়াবহ পর্যায়ে’ পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
জেনেভা থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের সাতটি সংস্থা জানিয়েছে, ‘গাজায় বেঁচে থাকার জন্য জ্বালানি হচ্ছে মেরুদণ্ড।’
তারা বলেছে, হাসপাতাল, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও অ্যাম্বুলেন্সসহ সব ধরনের মানবিক কার্যক্রম চালাতে জ্বালানি অপরিহার্য। এমনকি রুটির বেকারিগুলোতেও জ্বালানি লাগে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর হামাসের আক্রমণের পর শুরু হয় যুদ্ধ। এরপর থেকেই গাজায় জ্বালানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে এখন তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ)।
তারা জানিয়েছে, ‘প্রায় দুই বছর ধরে চলমান এই যুদ্ধে গাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে দুর্ভিক্ষের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা জনগোষ্ঠীটির ওপর আরেকটা অসহনীয় চাপ পড়বে।’
জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় পরিমাণ জ্বালানি না পেলে, ইসরাইলি বোমা হামলায় ধ্বংস হওয়া এবং দুর্ভিক্ষের হুমকিতে থাকা গাজায় চলমান মানবিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এর মানে— স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি ও ত্রাণ পৌঁছানোর সক্ষমতা সব কিছুই বন্ধ হয়ে যাবে।
এতে সতর্ক করে বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত জ্বালানি না থাকলে, গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘জ্বালানি ছাড়া বেকারি ও কমিউনিটি রান্নাঘরগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। খাবার পানি উৎপাদন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে, ফলে পরিবারগুলো বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়বে। এদিকে রাস্তায় জমতে থাকবে আবর্জনা ও পয়ঃবর্জ্য।’
‘এই পরিস্থিতি প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করবে এবং গাজার সবচেয়ে দুর্বল ও ঝুঁকির মধ্যে থাকা মানুষগুলোকে মৃত্যুর আরও কাছাকাছি নিয়ে যাবে।’
এই সতর্কবার্তা এসেছে এমন সময়, যখন জাতিসংঘ ১৩০ দিনের বিরতির পর মাত্র কয়েকদিন আগে প্রথমবারের মতো গাজায় জ্বালানি ঢুকাতে সক্ষম হয়।
যদিও এটি ‘প্রশংসনীয় অগ্রগতি’, তবে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর মতে, ৭৫ হাজার লিটার জ্বালানি ঢোকানো গেলেও তা প্রতিদিনের চাহিদার সামান্য এক অংশ মাত্র।
তারা বলেছে, ‘জাতিসংঘ সংস্থাগুলো ও তাদের মানবিক অংশীদাররা এই মুহূর্তের গুরুত্ব যথাযথভাবে বোঝাতে অক্ষম।’
‘জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রমগুলোকে সচল রাখতে, গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ও ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে।’