পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের তারিখ ‘নির্ধারিত’ হয়নি : ইরান

বাসস
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫০

ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইরান সোমবার জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ‘কোনো নির্দিষ্ট তারিখ’ নির্ধারণ করা হয়নি। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ফলে আলোচনার গতি থেমে যায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি বলেন, ‘এই বিষয়ে (ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার জন্য) এখনও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ, সময় বা স্থান নির্ধারণ করা হয়নি।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ এপ্রিল থেকে পাঁচ দফা বৈঠক করেন, তবে কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি। এটি ছিল ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংলাপ।

ইসরাইল আকস্মিকভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা শুরু করায় ওমানের মধ্যস্থতায় চলা ওই আলোচনা গত ১৩ জুন থেমে যায়। এরপর শুরু হয় ১২ দিনের যুদ্ধ, যাতে পরে যুক্তরাষ্ট্রও অংশ নেয়। 

বাকায়ি বলেন, ‘আমরা কূটনীতি ও আলোচনায় আন্তরিক ছিলাম। কিন্তু সবাই দেখছে যে ষষ্ঠ দফা আলোচনা শুরুর আগেই জায়নবাদী রাষ্ট্র (ইসরাইল) যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে ইরানের ওপর সামরিক আগ্রাসন চালায়।’

ইসরাইল ও পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করে আসছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে। যদিও তেহরান বারবার তা অস্বীকার করেছে।

ইরানই একমাত্র অ-পারমাণবিক দেশ, যারা ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির মাত্রার খুব কাছাকাছি। তবে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, ইরান তাদের মজুদ অস্ত্রায়নের চেষ্টা করছে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

গত মাসে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী, শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা ছাড়াও আবাসিক এলাকাও লক্ষ্যবস্তু হয়।

যুক্তরাষ্ট্র ২২ জুন ইরানের ওপর পৃথক হামলা চালায়। তারা কোম প্রদেশের ফোর্দো সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রসহ ইস্পাহান ও নাতাঞ্জের স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। বকায়ি বলেন, ‘এখনও তদন্ত চলছে।’

ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাতারে অবস্থিত একটি ঘাঁটিতে আঘাত হানে।

বাকায়ি বলেন, ইরান এখনো ২০১৫ সালের চুক্তির ইউরোপীয় তিন পক্ষ- ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

এই দেশগুলো ‘স্ন্যাপব্যাক’ বা তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছে, যদি ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করে।

বাকায়ি বলেন, ‘আমরা এই তিন দেশের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ রাখছি। তবে তাদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকের নির্দিষ্ট তারিখ আমি এখন বলতে পারছি না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো আইনি, নৈতিক বা রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। ইরান এখনো ২০১৫ সালের চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপের উপযুক্ত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ জবাব দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ইরান ধীরে ধীরে তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে।

বাকায়ি বলেন, ‘ইরান এখনও নিজেকে জেসিপিওএ’র (২০১৫ সালের চুক্তি) সদস্য হিসেবেই বিবেচনা করে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঢাকা জেলা পরিষদের বাস্তবায়নাধীন ভবনের নথি গায়েব : দুদকের অভিযান
‘আমরা জুলাই বিক্রি করি না, কাউকে বিক্রি করতেও দেবো না’
নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করলেন জেলেনস্কি
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে মিশরীয় উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানালেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবালের কর্ণধার খায়রুল বাশার গ্রেফতার
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদারে আগ্রহী সৌদি আরব  
জয় ও পুতুলের নথি চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিল দুদক
সবুজ জ্বালানিতে চীনের সঙ্গে ‘ন্যায্য প্রতিযোগিতা’ চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন
এইচপি ও ডেভলপমেন্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছেন বিসিবি সভাপতি
নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ দেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা
১০