ঢাকা, ৩ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ রোববার হাজার হাজার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে সিডনির হারবার ব্রিজ অতিক্রম করেন। এই বিক্ষোভের ফলে বিশ্ববিখ্যাত এই সেতুটি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
সিডনি থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
গত বছর উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন ব্রিটিশ কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসা অ্যাসাঞ্জকে পরিবার পরিবেষ্টিত অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী বব কারের সাথে মিছিল করতে দেখা গেছে।
গাজায় অপুষ্টি ও মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও সমালোচনা বাড়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডা কিছুটা শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। অস্ট্রেলিয়া গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া এক ডজনেরও বেশি দেশের সাথে এক যৌথ বিবৃতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ‘ইচ্ছা বা ইতিবাচক বিবেচনা’ প্রকাশ করেছে। যেটিকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির মধ্যেও সেতু পার হন এবং ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হোক’ এই স্লোগান দেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানায়, তারা এ বিক্ষোভের জন্য সিডনির বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত শত শত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
বামপন্থী গ্রিনস পার্টির নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনেটর মেহরিন ফারুকি সেন্ট্রাল সিডনির ল্যাং পার্কে জনসমাবেশে বলেন, এই মিছিল ইতিহাস সৃষ্টি করবে।
তিনি গাজার জনগণের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি এই বিক্ষোভ বন্ধ করতে চাওয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস কঠোর সমালোচনা করেন।
মিছিলে অনেকে এমন ব্যানার বহন করেন যাতে গাজায় নিহত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশুর নাম তালিকাভুক্ত ছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে এই যুদ্ধ শুরু হয় ।
বিক্ষোভে লেবার পার্টির সংসদ সদস্য এড হুসিক উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জনসম্মুখে কোনো বক্তব্য দেননি এবং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেননি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, চলমান সহিংসতায় ৬০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের হামাসের হামলায় ১,২১৯ জন নিহত হয়। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক ছিল। এছাড়া তাদের ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় আটক। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে তাদের মধ্যে ২৭ জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন।
১৯৩২ সালে উদ্বোধন করা যমজ খিলান আকৃতির এই হারবার ব্রিজটি এক কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা। বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত এ ব্রিজটি সিডনি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক হয়ে উঠেছে।