
ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): পোপ লিও চতুর্দশ শুক্রবার বিশ্বের অর্থডক্স খ্রিস্টানদের আধ্যাত্মিক নেতা বারথলোমিউ প্রথমের সঙ্গে নাইসিয়ার কাউন্সিলের ১,৭০০তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন।
এটি তার তুরস্ক সফরের দ্বিতীয় দিন।
আমেরিকান এই পোপ বৃহস্পতিবার চার দিনের সফর শুরু করেন। আঙ্কারায় পৌঁছে তিনি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সংঘাতপূর্ণ বিশ্বে তুরস্ককে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
পোপ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই লিও চতুর্দশের প্রথম বিদেশ সফর।
তুর্কি নেতাকে পোপ বলেন, ‘মাননীয় প্রেসিডেন্ট, তুরস্ক যেন মানুষের মধ্যে শান্তি ও সৌহার্দ্যের সেতুবন্ধন হয়। ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির জন্য এ ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।’
এই সফরে কড়া নিরাপত্তার কারণে আঙ্কারার প্রায় ফাঁকা রাস্তা দিয়ে পোপের গাড়িবহর চলাচল করে। প্রায় ৮ কোটি ৬০ লাখ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ।
পোপ বলেন, ‘এই ভূমি খ্রিস্টান ধর্মের উৎপত্তির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। আজ এটি ইব্রাহিমের সন্তান ও সমস্ত মানবতাকে এমন এক ভ্রাতৃত্বের আহ্বান জানাচ্ছে, যেখানে ভিন্নতাকে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া হবে।’
এর পরই তিনি ইস্তাম্বুলে যান, সেখানে তিনি রোববার পর্যন্ত থাকবেন।
পরে তিনি লেবাননের উদ্দেশে রওনা হবেন।
শুক্রবার ৭০ বছর বয়সী পোপ সকালে প্রথমে ক্যাথলিক নেতাদের সঙ্গে কাটাবেন। এরপর তিনি ইজনিক শহরে যাবেন যেখানে প্রথম নাইসিয়া কাউন্সিল গঠন করা হয়।
এই শহরেই নাইসিয়া কাউন্সিলের ১,৭০০তম বার্ষিকী উদযাপন করা হবে।
বিশপদের এই সমাবেশে খ্রিস্টান ধর্মের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত একটি বিশ্বাস সংক্রান্ত ঘোষণা তৈরি করা হয়েছিল, যা আজও এই ধর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
বিশ্বের অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের নেতা, কনস্টান্টিনোপলের প্যাট্রিয়ার্ক প্রথম বার্থোলোমিউ-এর আমন্ত্রণে পোপ লিও প্রথম কাউন্সিল যেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই স্থানটি পরিদর্শনে যাবেন।
এরপর তারা একটি বিশ্বজনীন প্রার্থনা সভায় যোগ দেবেন।
১০৫৪ সালে পশ্চিমা রোমান ক্যাথলিক চার্চ ও পূর্বাঞ্চলীয় অর্থোডক্স চার্চ বিভক্ত হয়ে যায়। একে ‘মহান বিভক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
মতবাদের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা এখন বিভাজন দূর করতে আলোচনা চালায় ও যৌথভাবে উদযাপন করে।
এমনকি সম্প্রতি তারা ইস্টার উদযাপনের জন্য একটি সাধারণ তারিখ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।
বর্তমানে ক্যাথলিকরা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও অর্থোডক্সরা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে।