ঢাকা, ৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহু সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানসহ কয়েকশ অবসরপ্রাপ্ত ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
সোমবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে সাবেক কর্মকর্তারা লেখেন, ‘আমাদের পেশাদারিত্বের বিচারে হামাস এখন আর ইসরাইলের জন্য কৌশলগত কোন হুমকি নয়।’
দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক পরিচালক অ্যামি আয়ালন বলেন, শুরুতে এই যুদ্ধ ন্যায়সঙ্গত ও আত্মরক্ষামূলক ছিল। কিন্তু যখন আমরা সমস্ত সামরিক লক্ষ্য অর্জন করে ফেলেছি, তখন থেকে আর ন্যায়সঙ্গত নয়।
চিঠির সঙ্গে প্রকাশিত ভিডিওবার্তায় আয়ালন সতর্ক করে বলেন, প্রায় ২৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধ এখন ইসরায়েল রাষ্ট্রকে তার নিরাপত্তা ও পরিচয় হারিয়ে ফেলতে বাধ্য করছে।
শিন বেট ও মোসাদের সাবেক প্রধানসহ ৫৫০ জন স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির দিকে ‘চালিত’ করতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল।
গত কয়েক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বেড়েছে। এতে আশা করা হচ্ছে, গাজা থেকে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব হবে এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো মানবিক সহায়তা বিতরণ করতে পারবে।
তবে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের কিছু মন্ত্রী এখনো গাজায় অভিযান চালিয়ে যাওয়ার এবং আংশিক বা পুরো অঞ্চল দখলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী মোসাদের তিন সাবেক প্রধান হলেন তামির পারদো, ইফ্রায়িম হেলেভি ও ড্যানি ইয়াতোম।
অন্যান্যদের মধ্যে শিন বেটের পাঁচ সাবেক প্রধান রয়েছেন। তারা হলেন আয়ালন, নাদাভ আরগামান, ইয়োরাম কোহেন, ইয়াকভ পেরি ও কারমি গিলন।
তিন সাবেক সেনাপ্রধানেরও নাম রয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালন ও দান হালুটজ।
চিঠিতে বলা হয়, ইসরাইলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে এমন দুটি লক্ষ্য পূরণ করেছে, যেগুলো বলপ্রয়োগ ছাড়া অর্জন করা অসম্ভব ছিল। আর তা হল, হামাসের সামরিক কাঠামো ও শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করা।
আরো বলা হয়, তৃতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কেবলমাত্র একটি চুক্তির মাধ্যমেই সমস্ত জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।
এতে বলা হয়, হামাসের যেসব শীর্ষ নেতা এখনো বেঁচে আছেন, তাদের পরেও আটক করা সম্ভব।
চিঠিতে সাবেক কর্মকর্তারা ট্রাম্পকে বলেন, ‘আপনার প্রতি ইসরাইলিদের বড় অংশের আস্থা রয়েছে। আপনি চাইলে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধ বন্ধ এবং জিম্মিদের ফেরত আনার পথ তৈরি করতে পারেন।’
তারা মনে করেন, যুদ্ধবিরতির পর ট্রাম্প একটি আঞ্চলিক জোট গঠনে নেতৃত্ব দিতে পারেন। যারা হামাসের বিকল্প হিসেবে গাজা শাসনের দায়িত্ব নিয়ে নতুনভাবে গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সমর্থন দেবে।