সাব-রেজিস্ট্রি অফিস গ্রহণে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রস্তুত: ভূমি উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫ আপডেট: : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:২৫
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ছবি : বাসস

।। মোশতাক আহমদ।।

ঢাকা, ১৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): দেশের সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলো গ্রহণে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। 

বুধবার সচিবালয়ের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে  তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। এ সম্পর্কে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনেরও একটা সুপারিশ রয়েছে। যদিও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো এখন আছে আইন মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তবে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এগুলো যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আন্ত:মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়া হয় সে ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয় তা গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে। 

তিনি বলেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ে আনার ক্ষেত্রে শুধু ক্যাবিনেটে আমাদের কার্য পরিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ে আসলে জনবলসহ আসবে। এটা ব্যবস্থাপনায় আমরা সম্মত আছি। 

মাঠ পর্যায়ে ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এর কারণ হচ্ছে, ভূমি সংক্রান্ত আইনগুলো আমাদের সকলের জানা নেই। কিছু জটিলতাও আছে। কিছুক্ষেত্রে আইনগুলো সবসময় ইউজার ফ্রেন্ডলি না। সুতরাং এক্ষেত্রে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়। আর এটার সুযোগ নেয় আমাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমরা যথাযথভাবে তাদের তদারক করি না বা করতে পারি না।

অভিযোগের প্রতিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ভূমি কর্মকর্তারা অত্যন্ত তৃণমূল মানুষের সঙ্গে কাজ করে, সেক্ষেত্রে অনেক অভিযোগ থাকতে পারে। তবে অভিযোগ সর্বাংশে অনেক সময় সত্য নাও হতে পারে। কারণ আমরা দেখেছি অভিযোগের পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তারা বলে থাকেন যে স্যার আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। আমরা দোষী নই। 

তিনি বলেন, তবুও যদি ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ আসে, অন্যায়ভাবে কারো (গ্রাহকের) ওপর অবিচার করা হয়েছে এবং তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, অভিযোগগুলোর প্রতিকার করার সুযোগ থাকলে, আমরা প্রতিকারের চেষ্টা করি। তবে এ জন্য থানা বা উপজেলা পর্যায়ে কোন আলাদা অভিযোগ সেল করার চিন্তা সরকারের নেই। কারণ উপজেলা পর্যায়ে এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ করা যায়, ইউএনওর কাছেও করা যায়, এমনকি জেলা প্রশাসকের কাছেও ভূমি সেবা প্রত্যাশীরা অভিযোগ করতে পারেন। এছাড়া আমাদের একটা টেলিফোন হেল্প লাইন আছে, যেখানে ২৪ ঘণ্টায় মানুষ অভিযোগ জানাতে পারে।

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন কিছু জলমহাল রয়েছে উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, এটা একটা ইন্টিগ্রেটেড ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হয়ে থাকে। এটার সাথে মৎস্য বিভাগের লোকেরা জড়িত থাকে। তাছাড়া জেলা মৎস্য উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সাথে কমিটিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটিকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ২০ একরের ঊর্ধ্বে সব জলমহাল ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ (বন্দোবস্ত) দেয়া হয়। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।

তিনি বলেন, কো-অপারেটিভ সোসাইটি নিবন্ধিত হতে হয়। জলমহাল সমিতিগুলোর রেজিস্ট্রেশন আছে। এটা নিয়ে আমাদের জেলা থেকে সেন্ট্রাল পর্যায়ে কমিটি আছে। ভূমি উপদেষ্টার নেতৃত্বে ২০ একরের উর্ধ্বের জলমহালগুলোর বিষয়ে জাতীয় কমিটি আছে।  

আলী ইমাম মজুমদার আরো বলেন, জলমহালের জাতীয় কমিটির প্রতি মিটিংয়ে বাছাই করে ডিস্ট্রিক্ট থেকে আসা জলমহালগুলো থেকে আমরা উন্নয়ন খাতের জন্য বরাদ্দ দিয়ে আসছি। আজকের সভাতেও ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে দুইটি জলমহাল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একটিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা স্থগিত হওয়ায় আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। আরেকটি হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশন কর্তৃক বরাদ্দ স্থগিত করায় সেটাও আমরা নতুন ভাবে বরাদ্দ দিয়েছি। 

পার্বত্য ভূমি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য ভূমি ব্যবস্থাপনা একটি জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া। পার্বত্য অঞ্চলে যেহেতু অনেক পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বসবাস করে, একইসাথে সমতলের লোকেরাও থাকে তাই খুব বুঝে শুনে সেখানে ভূমি সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। 

গত ১৬ বছর দেশের বিভিন্নস্থানে যারা ভূমি বন্দোবস্ত নিয়েও উন্নয়ন কার্যক্রম চালাচ্ছে না তাদের বিষয়ে আদালত থেকে নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ভূমি উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়াই বন্দোবস্ত দেওয়া হোক না কেন তা বাতিল করতে হলে আদালতের রায় লাগবে। এছাড়া যারা এখন পালিয়েছে তাদের অন্য সম্পত্তির ন্যায় ভূমিগুলোও মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন করা হবে। 

চা বাগানের জমি ইজারা বিষয়ে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, এগুলো নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। তারা কিছু জমি কিনলেও বাকি জমিগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইজারা নিয়েই চা-বাগান করেছে। 

৩০ বছরের ঊর্ধ্বে যারা জমির খাজনা পরিশোধ করছেন না তাদের জমি সরকারের আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জমির যে খাজনা আমরা নেই তা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম। ভবিষ্যতে সেটাও হয়তো বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে। কে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বনজ কুমারের মামলা থেকে খালাস পেলেন সাংবাদিক ইলিয়াস
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না : রেলপথ উপদেষ্টা
নির্বাচনী আসনে সীমানা নিয়ে ১,৮৯৩টি আপত্তি নিষ্পত্তি করেছে ইসি
গ্রামের ধীরগতির মহিষের গাড়ি আজ কেবলই স্মৃতি
বাংলাদেশের কাঁচা পাট ১২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে 
চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও হালিশহর টিজিকে আধুনিক ল্যান্ডফিল্ড করা হবে : মেয়র
সুনামগঞ্জের সাংবাদিক ফজলুল হক সেলবর্সী ছিলেন জাতীয় কবির ঘনিষ্টজন
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল ৬ সেপ্টেম্বর: কমিটি নির্বাচনে কমিশন গঠন
হিটের ১৫১ উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউজিসি’র চুক্তি স্বাক্ষর
শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শেই শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে: শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা
১০