ঢাকা, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগে আলোচিত চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলায় পরীমনির সাথে একই ফ্লাটে বসবাসরত সৌরভ (২৮) নামে এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
গত ১৭ এপ্রিল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহপরিচারিকা পিংকি আক্তার। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিদুস জামান নিশান বাসস’কে বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের মার্চে মামলার বাদী পিংকি আসামিদের বাসায় কাদের এজেন্সি নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহপরিচারিকার চাকরি নেন। একটি বাচ্চাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে এজেন্সি হতে বাদীকে আসামিদের বাসায় নিয়োগ দেয়া হলেও বাদীকে দুটি বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হত। এছাড়া বাদীকে দিনে ও রাতে উভয় সময় বাসার রান্নার কাজ করতে হত। তবুও বাদীর চাকরি একান্ত আবশ্যক হওয়ায় বাদী সকল কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে আন্তরিকতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তবে চলতি বছরের ২ এপ্রিল দুপুর ১টায় আসামি পরীমনি তার মেকআপ রুম হতে মাদক গ্রহণ করে বাচ্চার রুমে এসে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। বাদী গালিগালাজ কেন করছেন জানতে চাইলে পরীমনি বলে ‘তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি।’ বাদী বলে, ‘বাচ্চার খাওয়ার রুটিন অনুসারে এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই আমি দুধ তৈরি করেছি।’
এ সময় পরীমনি ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীর মাথায়, মুখে ও চোখে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী পিংকি পরীমনির মারধরে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী পিংকি তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পরীমনিকে অনুরোধ করতে থাকেন। ঘটনার সময় ২ নম্বর আসামি সৌরভ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আসামিরা বাদীর কোনো কথা শুনেন নাই। উপরন্তু আসামি সৌরভ পিংকিকে নির্যাতন করার জন্য পরীমনিকে উৎসাহিত করতে থাকেন এবং বাদীকে বাসার বাইরে যাওয়া থেকে বিরত করেন।
পরে ভুক্তভোগী পিংকি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে যান। পরে ভুক্তভোগী পিংকি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল হতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার গত ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে এটির কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য না করে তিনি আদালতে মামলা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৫০৬/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।