শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দ্রুত রায় বিচার বিভাগের বড় সাফল্য

বাসস
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১৬:২১
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ১৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দ্রুত রায় বিচার বিভাগের একটি বড় সাফল্য, এতে সন্তোষ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

আজ তার ভেরিফাইড ফেসবুকে তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এডভোকেট শিশির মনির বলেন, মামলার বিচার শেষে যার যতটুকু শাস্তি ততটুকুই হতে হয়। আবেগ দিয়ে বিচার চলে না। তিনি বলেন, দ্রুত বিচার পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। দেখা গেছে কোন-কোন মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ১০-১৫ বছর সময় কিংবা তারও বেশি সময়ক্ষেপণ হয়। এতে করে বিচারের প্রাসঙ্গিকতা আর থাকে না।

এডভোকেট শিশির মনির বলেন, আরো যেসব চাঞ্চল্যকর মামলা রয়েছে, ওইসব মামলায় সাক্ষ্য সংগ্রহ সম্ভব হলে দ্রুত বিচার নিশ্চিতে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, অতীতে আমরা দেখেছি বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলায় গণহারে সাজা দিতে। আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও অন্যদের খালাস রায়ে খুশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দোষীকে শাস্তি এবং নিরাপরাধের খালাসই ন্যায়বিচার। তিনি বলেন, সংক্ষুদ্ধ পক্ষগণের আপিলের সূযোগ রয়েছে। শিশির মনির বলেন, দ্রুত বিচার করতে গিয়ে যেন নিরপরাধ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিও দেখতে হবে।

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানান, শিশির মনির। স্বল্প সময় বিচার সম্পন্ন করার যে নজির স্থাপন হলো সেটি যেন ইতিবাচক ভূমিকা রাখে বিচার বিভাগে এই প্রত্যাশা প্রকাশ করেন তিনি।

এর আগে আজ মাগুরায় চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। সেইসঙ্গে মামলার অন্য তিন আসামিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান আসামিদের উপস্থিতিতে আজ এই রায় ঘোষণা করেন।

সরকারপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, ‘১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, মেডিকেল এভিডেন্স ও সাক্ষীদের বক্তব্যে প্রধান আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আশা করেছিলাম, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সেটাই হয়েছে।’

চলতি বছরের ৬মার্চ বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন সকালে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ১৩মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির মা ৮মার্চ মাগুরা সদর থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৭এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। ২৩এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়। শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হলেও এ সব অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন তারা।

গত ২৭এপ্রিল মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু এবং ১৩মে যুক্তিতর্ক শেষে আজ ১৭মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জাবিতে ‘ইনক্লুসিভ জাহাঙ্গীরনগর’ প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু
একটি মহল বিপ্লবীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : শাহজাহান চৌধুরী
সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার বিশেষ ট্রাইবুনালে পাঠানো হবে : ডিএমপি
চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের দলে নেওয়া যাবে না : আমীর খসরু
মানুষের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য বিএনপি বারবার কথা বলেছে : রিজভী
যুক্তরাজ্যে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানের ৩ নাগরিক কারাগারে
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় মিলেছে
চট্টগ্রামে সেতুর উচ্চতা প্রতিবন্ধকে ধাক্কা খেয়ে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
কানের আসরে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিল নলিউড
১০