যুগান্তকারী রায়টি ভবিষ্যতের জন্য বার্তা: অ্যাটর্নি জেনারেল

বাসস
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৮
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণের স্বার্থে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়টিকে যুগান্তকারী ও ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ঐতিহাসিক এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনার মামলার রায়ে শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছে, রাষ্ট্র ন্যায়বিচার পেয়েছে, প্রসিকিউশন পক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, ন্যায়বিচারের মানদণ্ড হলো— এই মামলার দুই জন আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একজন আসামি রাজসাক্ষী হিসেবে নিজেকে আদালতের সামনে উপস্থাপন করেছেন এবং সার্বিক বিবেচনায় আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আমরা মনে করি শহীদদের প্রতি, দেশের প্রতি, এদেশের মানুষের প্রতি, সংবিধানের প্রতি, আইনের শাসনের প্রতি ও আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণের স্বার্থে এ রায় একটি যুগান্তকারী রায়। 

তিনি বলেন, এই রায় প্রশান্তি আনবে, এ রায় ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা, এ রায় বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

সেই সাথে এই মামলার আসামী থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করেন। 

রায় প্রদানকারী এই ট্রাইব্যুনালে অপর দুই সদস্য বিচারক হলেন— মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি করেন। 

এছাড়া শুনানিতে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি ও আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। 

অন্যদিকে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, আর রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। 

এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন— জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বোমোট ৫৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এক পর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রুভার) রাজসাক্ষী হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক  অভিযোগ জমা পড়ে। 

এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সে সব অভিযোগের বিচার চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ উদ্বোধন আগামীকাল 
ডিএসইতে লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, অধিকাংশ সূচক বৃদ্ধি
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে : ভিপি নূর
রাজসাক্ষী মামুনের ৫ বছরের সাজায় শহীদ পরিবারের অসন্তোষ
রাজশাহীতে গম উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা ৫.৪০ লাখ টন
নওগাঁয় বিএনপি’র পথসভা
চট্টগ্রামে আমনের বাম্পার ফলনে ছাড়াবে লক্ষ্যমাত্রা, কৃষকের ঘরে উৎসবের আমেজ
যানজট নিরসনে মুন্সীগঞ্জে ডিজিটালের আওতায় আসছে অটোরিকশা 
বিএমইউতে রোবটিক সার্জারি নিয়ে ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত
ন্যাশনাল ইনন্সিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত 
১০