শিরোনাম
ঢাকা, ১২ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নযয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে সমবায়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বআরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষকে সুসংগঠিত এবং তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য সমবায় শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। প্রান্তিক মানুষের ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র পুঁজি একত্রিত করে, তা তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির কাজে ব্যবহার করতে পারলে গ্রামীণ অর্থনীতির চেহারা আমুল পালটে যাবে।’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার ‘নিউ কমিউনিটি মুভমেন্ট’র উদাহরণ দিয়ে বলেন, কুমিল্লার ‘বাংলাদেশ একাডেমি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড)-এর কার্যাবলী অনুসরণ করে দক্ষিণ কোরিয়া তার দেশের জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে তাদের গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী ভিতের উপর দাঁড় করাতে পেরেছে।
তাজুল ইসলাম আজ শনিবার কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির ময়নামতি অডিটোরিয়ামে বার্ড’র ৫৬তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ.কে.এম বাহাউদ্দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব হামিদা বেগম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। কুমিল্লাস্থ বার্ড’র মহাপরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ মোল্লা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরো শক্তিশালীকরণের সুযোগ আমাদের দেশেও তৈরি হয়েছে। সমবায়ের মাধ্যমে সে সুযোগ এখন আমাদেরকে নিতে হবে। শুধুমাত্র শহরের উন্নয়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।’ তিনি বলেন, সমবায় গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হতে পারে।
এরজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তারপর বিদ্যুৎঘাটতির বাংলাদেশকে তিনি শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশে পরিণত করেন। আর এখন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা মোবাইলে থাকার ফলে জ্ঞান বিজ্ঞানের অবারিত দ্বার মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। যার ফলে করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আমাদের অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে, যেখানে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও এ প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছে।’
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, দক্ষিণ কোরিয়া যদি ‘কুমিল্লা বার্ড মডেল’ অনুসরণ করে তাদের অর্থনৈতিক গতিপ্রকৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে বাংলাদেশও পারবে। সেক্ষেত্রে মন্ত্রী বার্ড’র নীতি নির্ধারকদের তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা ভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তাজুল ইসলাম বিভিন্ন জাতীয় কর্মসূচির সাথে কুমিল্লা বাড’র সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, দারিদ্রবিমোচন, উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি এবং জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে কুমিল্লা বার্ড গবেষণা করে বিভিন্ন প্রকল্প নিতে পারে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, উন্নত বাংলাদেশ-২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সমন্বয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় গবেষণা করার জন্য বার্ড’র প্রতি আহবান জানান। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হবে বলেও তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।