বাসস
  ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫০

ঈদে রেল যাত্রা স্বস্তির

ঢাকা, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস) : রাজধানী থেকে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়িতে ঈদ যাত্রায় ঝক্কিঝামেলার অভিযোগ থাকলেও অন্যবারের তুলনায় এবার রেলযাত্রা অকেটা নির্বিঘ্ন হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কঠোর ভূমিকায় এবার অনলাইনে টিকিট বিক্রি হওয়ায় স্টেশনে টিকিটের জন্য কোন লাইন ছিল না। 
আজ মঙ্গলবার  কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে যাত্রী সাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ট্রেন বিলম্বে ছাড়ারও অভিযোগ নেই। অনলাইন টিকিট নিয়ে এসে সরাসরি প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে ট্রেনে উঠে গেছেন যাত্রীরা। চাপ থাকলেও সবার মাঝে স্বস্তি ছিল।
সকালে রংপুর এক্সপ্রেসের এক যাত্রী মাহমুদ কামাল বাসস’কে বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বারের তুলনায় বেশ স্বস্তির হচ্ছে। ভোগান্তি একেবারেই কম। যতটুকু আছে সেটিও মানুষের চাপ। এটি হওয়াই স্বাভাবিক।’
দিনের শুরুতে উত্তরবঙ্গগামী দুটি ট্রেনে যাত্রীর চাপের কারণে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। টিকিট থাকা সত্ত্বেও বয়স্ক, নারী ও শিশু অনেকে উঠতে খুব কষ্ট হয়েছে। এছাড়া বাকি সব স্বাভাবিক ছিল।
কমলাপুর রেলস্টেশনে সকালের দিকে মানুষের চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে চাপ কমে গেছে। 
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, সকালে উত্তরবঙ্গগামী দুটো ট্রেনে যাত্রীর চাপ ছিল বেশি। এর বাইরে সবকিছু এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে। সময়মতো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদেরও হয়রানি তেমন নেই। অনলাইনে টিকিট দেখিয়ে প্রবেশ করছে, নিজ কোচে গিয়ে উঠছে। 
সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ২০টি ট্রেন ছেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারাদিন প্রায় ৬৭টি ট্রেন চলে। সকালে যাত্রীর চাপ ছাড়া আর কোনো অভিযোগ আসেনি। সবকিছু স্বাভাবিক আছে।
কমলাপুর স্টেশনে র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রেলের কর্মকর্তাদের সুশৃঙ্খল পরিবেশ দেখা গেছে। প্রবেশদ্বারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রেলের নিরাপত্তাকর্মীরা টিকিট দেখছেন। প্ল্যাটফর্মে মানুষের চাপ থাকলে অব্যবস্থাপনা তেমন চোখে পড়েনি। 
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে র‌্যাব কাজ করছে জানিয়ে বলেন, ঈদে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে র‌্যাব নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মানুষ যাতে সুন্দরভাবে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য গোয়েন্দারা কাজ করছে, সাইবার জগতেও রয়েছে নজরদারি। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা ও বাহিনীর সঙ্গে তথ্য সমন্বয় করা হচ্ছে। যাতে করে ঈদে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করা যায়।
টিকিট কালোবাজারি চক্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যদি একজন দালালকেও পাই- যার কারণে রেলের যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তাহলে ওই দালালের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি  আরও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে র‌্যাব। তবে কেউ প্রকাশ্যে নেই। যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ- আপনারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ট্রেনে চলাচল করুন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নেবেন না।
সকালে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের  এক যাত্রী রাশেদ আহমেদ বলেন, এখানে এসে মানুষের চাপের কারণে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। অনলাইনে টিকিট কাটায় কোনো ভোগান্তি হয়নি এবার।
সকালের দিকে তিস্তা এক্সপ্রেস ছাড়াও উত্তরবঙ্গগামী একতাসহ কয়েকটি ট্রেনে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী ছিল। ছাদেও উঠেছে অনেক যাত্রী। যদিও রেলের নিরাপত্তাকর্মীদের তাদের বারণ করতে দেখা গেছে। কিন্তু মানুষের চাপ এত বেশি যে- কেউ কারো কথা শোনার অবস্থা নেই। চাপ দিয়ে শোনানোর মতো পরিস্থিতিও নেই।