বাসস
  ০৪ জুন ২০২৪, ১৪:৫৫

সূত্রাপুরের আলোচিত অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ

ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৪ (বাসস): রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামি মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্ট আপিল আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া আসামি ইফতেখার বেগ ঝলককে আমৃত্যু কারাদন্ড ও খালাস পাওয়া অপর আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না জামিনে থাকায় তাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
২০১৮ সালের মে মাসে রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদ- বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত দুজনকে খালাস এবং অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি হাইকোর্ট। মৃত্যুদ- বহাল থাকা দুই আসামি হলেন মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিন। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না, ইফতেখার বেগ ঝলককে খালাস দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত অপর দুই আসামি মাহবুব আলম ও বিপ্লব চন্দ্র দাস পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি হাইকোর্ট। পরে মৃত্যুদ-ের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। একইসঙ্গে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১২ সালের ১৩ মার্চ আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসি ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয় বিচারিক আদালত। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে- ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসীরা এডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে ও আশিকুর রহমান খান অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আশিকুর রহমান খান অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে। এরপর তারা তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই ভাই বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান কেয়া বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে মাহবুব আলম ও বিপ্লব পলাতক। বাকিরা জেলহাজতে আছেন।
মামলায় আপিল বিভাগের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও হত্যার শিকার অপুর বোন আতিয়া খান কেয়া। রায়ের পর আতিয়া খান কেয়া আজ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ১৭ বছরের আইনি লড়াই শেষে আজ সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। ১৭ বছর আগে ভাইকে নির্মমভাবে খুন হতে দেখেছি। তারপর থেকে একা লড়াই করে এসেছি। প্রতি মুহূর্তে হুমকি পেয়েছি। অবশেষে আজ সত্যের জয় হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের কাছে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের, আমাদের আইনজীবীদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এখন দ্রুত আসামিদের ফাঁসি যেন কার্যকর হয়-সেই দাবি করছি।