বাসস
  ০৪ জুন ২০২৪, ১৯:৩২

নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৪ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। 
তিনি আরো বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে আজ এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৪’ পালন করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অদূরদর্শী কর্মকা-ের বিরূপ প্রভাবে সৃষ্ট পরিবেশ ও প্রতিবেশগত অবক্ষয় রোধ এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ দিবসটির পালন তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখন আটশত কোটিরও বেশি মানুষ বসবাস করছে। সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে ভূমির ব্যবহার। ভূমি সম্পদের অপরিমিত ও অপরিণামদর্শী ব্যবহারে বিশ্ব জুড়ে ভূমির অবক্ষয় তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ‘ইউনাইটেড নেশন্স কনভেনশন টু ডিজার্টিফিকেন্স (ইউএনসিসিডি)’ বিশ্বব্যাপী টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ২০৩০ সালের মধ্যে ‘ল্যান্ড ডিগ্রিডেশন নিউট্রালিটি (এলডিএন)’ অর্জনের রূপরেখা প্রদান করেছে। 
তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কাঙ্খিত ভূমি অবক্ষয় নিরপেক্ষতা বা এলডিএন অর্জন করা সম্ভব না হলে ২০৪৫ সালের মধ্যে পৃথিবীব্যাপী ১৩৫ মিলিয়ন মানুষ খরার কারণে উদ্বাস্তু হতে পারে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর অভিঘাত আমাদের জন্য চরম বাস্তবতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী মরুময়তা ও খরার প্রবণতা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হচ্ছে, যার কারণে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কাজেই, বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এবছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা।’ যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সময়োপযোগী হয়েছে।  
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বময় ভূমির অবক্ষয় রোধ, মরুকরণ ও খরার প্রভাব প্রশমনের লক্ষ্যে সরকার জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। 
তিনি বলেন, ইউএনসিসিডিতে বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে এ সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন রিপোর্ট দাখিল করে যাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাকশন প্রোগ্রাম (ন্যাপ) টু কমব্যাট ডির্জাটিফিকেশন, ল্যান্ড ডিগ্রেডিটিশন এন্ড ড্রট ২০১৫-২০২৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। 
তিনি বলেন, জাতীয় পরিবেশনীতি ২০১৮ প্রণয়ন এবং এটি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আমরা ইউএনসিসিডি এবং ন্যাপের সঙ্গে সমন্বয় করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ২০৩০ সালের মধ্যে ভূমি অবক্ষয় নিরপেক্ষতা (এলডিএন) অর্জনের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমন্বিতভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলার অংশ হিসেবে সরকার ইতোমধ্যে ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান ২০২৩-২০৫০, আপডেটেড ন্যাশনালী ডিটারমাইনড কনট্রিবিউশন (এনডিসি) ২০২১ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান ২০২২-২০৪১  গ্রহণ করেছে। 
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে প্রথমবারের মত ইউএনএফসিসিসির সহায়তায় বিশ্বের ১০৪টি দেশের অংশগ্রহণে ন্যাপ এক্সপো বাংলাদেশ ২০২৪ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ভূমি অভিযোজন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা আমার দশটি বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম। টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাসস্থান ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মরুকরণ ও খরার প্রবণতা হ্রাসে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করাই হোক বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অঙ্গীকার।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রতিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।