বাসস
  ০৪ জুন ২০২৪, ১৯:৩৪

ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন সীমিত রাখতে বৃক্ষরোপণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ : রাষ্ট্রপতি

ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৪ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন সীমিত রাখতে বৃক্ষরোপণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও নির্মল পরিবেশ গড়ে তুলতে অধিক হারে গাছ লাগানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে এ আহবান জানান।
আগামীকাল বুধবার (৫ জুন) ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা’। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামীকাল ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ পালিত হচ্ছে।
‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন’ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা’র আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করে মো. সাহাবুদ্দিন জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে ধরণীকে বাসযোগ্য রাখার অন্যতম উপাদান হলো বৃক্ষ। মানুষ তার মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বৃক্ষরাজির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। প্রাণিকুলের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন উৎপাদন ছাড়াও পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ নিশ্চিতে বৃক্ষের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। 
রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে সবুজ-শ্যামল অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত বাংলাদেশের বনাঞ্চল ও জীববৈচিএ্য ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। অবাধে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। 
বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন বৃদ্ধির অন্যতম কারণও হলো পরিবেশ দূষণ। ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন সীমিত রাখতে বৃক্ষরোপণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্যামল বাংলার এই অপরূপ প্রকৃতি রক্ষায় ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে একটি সুষম সবুজ আচ্ছাদন গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪ এর প্রতিপাদ্য-‘বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলেও তিনি  মনে করেন।
মোঃ সাহাবুদ্দিন উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুজলা, সুফলা, চিরসবুজ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার দেশের বনজ সম্পদের উন্নয়ন, বন সংরক্ষণ ও বৃক্ষাচ্ছাদন বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে বিদ্যমান বন সংরক্ষণের পাশাপাশি বন সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিলুপ্ত বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। 
তিনি জানান, স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে সরকারি বনভূমি ও প্রান্তিক ভূমিতে সামাজিক বনায়ন, সরকারি বনভূমিতে সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষিত এলাকায় সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া, বন ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধনে সকল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। 
রাষ্ট্রপতি বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য এসকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবৈধভাবে বৃক্ষ নিধন প্রতিরোধ ও এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর অবদান রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বৃক্ষরোপন অভিযান বাস্তবায়নে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যারা বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার, ২০২২ ও ২০২৩ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও গবেষণায় অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন, ২০২৩ ও ২০২৪ পেয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। 
রাষ্ট্রপতি আশা করছেন, তাদের এ অর্জন অন্যদেরকেও বনায়ন ও বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসতে উৎসাহ যোগাবে। 
তিনি ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ সার্বিক সফলতা  কামনা করেন।