বাসস
  ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫৪

সিউল ঢাকার অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চায়

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক আজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সহিষ্ণু ও গতিশীল করার লক্ষ্যে আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন এবং সিউল এই প্রচেষ্টায়  গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘কোরিয়ার জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে কোরীয় দূতাবাস আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কোরিয়া বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চায় এবং আমরা ইতোমধ্যে তৈরী পোষাক খাতে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল, কোরিয়ান সরকারের কাছ থেকে সফট লোন বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মেকানিজমের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য অনেক প্রকল্প বর্তমানে আলোচনাধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে আশা করছি যে, চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুততার সাথে অগ্রসর হবে এবং বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে।’

উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগিতা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রধান অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অংশীদার দেশ এবং বর্তমানে কোরিয়ার সরকারী সহায়তা (ওডিএ) প্রাপ্তদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য বার্ষিক ৩ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে এবং এ সহায়তার পরিমাণ এ বছর ১০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের হাব হয়ে উঠেছে। ২০০৮ সাল থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় ৩৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশী কর্মী কোরিয়ায় গেছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার প্রশংসনীয় কাজ করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার সেই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।’

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করেছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বৃদ্ধির মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী পর্যায়ে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে সরকারী ও বেসরকারী উভয় ক্ষেত্রেই যথেষ্ট প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ চতুর্থ বৃহত্তম অবস্থানে রয়েছে। কেইপিজেড বর্তমানে প্রায় ১.২৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করছে এবং ৭০,০০০ কর্মীর কর্মসংস্থান করেছে।

তিনি বলেন, দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে যা পারস্পরিক স্বার্থে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও জোরদার করবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা গত ৫০ বছরে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। আমি আশা করি, কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের পরবর্তী ৫০ বছরের যাত্রা শুরু করতে সবাই আমার সাথে হাত মেলাবেন।’

দূতাবাস প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মহলের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।