শিরোনাম
\ শফিকুল ইসলাম বেবু \
কুড়িগ্রাম, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার খর স্রোতা ধরলা বুকে বিভিন্ন চর এখন সবুজ ফসলের মাঠ। চর জেগে ওঠা পলিমাটিতে চাষাবাদে ব্যস্ত কৃষকরা। এতে বেশ লাভবান হবেন এ অঞ্চলের চাষীরা।
জানা গেছে, এক থেকে দেড় যুগ আগেও পানির প্রবাহ ও প্রাণের স্পন্দন ছিল ধরলা নদীতে। এ নদীর প্রবল স্রোতের কারণে আঁতকে উঠতো নদী পাড়ের হাজারও বাসিন্দার। ধরলায় ধীরে ধীরে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীতে ছোট বড় শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার সময় দুই-তিন মাস বাদে বছরের বাকিটা সময় নদীর বুক চিরে পুরোদমে চলছে চাষাবাদ। সীমান্তঘেঁষা এ নদী এখন এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র আয়ের প্রধান উৎস। নদী শুকিয়ে যাওয়া এখন জীবন-জীবিকায় কৃষি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
তীরবর্তী চাষীরা টানা দেড় যুগ ধরে বোরো ধান, ভুট্টা, বাদাম, কলা, মরিচ, বেগুন, টমেটো, বাঁধা -কপি, সরিষা, আলু করলাসহ নানা মুখী ফসলের চাষাবাদ করে আসছেন। নদীতে পানির ধারণক্ষমতা না থাকায় বর্ষাকালে অল্প বৃষ্টিপাতে বন্যা হয়ে যায়। ফলে বছরে দুই বার চাষবাদ করা গেলেও এখন আবহাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিনবার ফসল ফলাতে পারছে কৃষক। এতে করে বর্ষা কাটিয়ে খরা মৌসুমের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষক।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ এলাকার ওসমান আলী জানান, নদী তীরবর্তী ২ বিঘা জমিতে বেগুনের চাষাবাদ করেছি। এ বেগুন ক্ষেত থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। আশা করছি, আরো বেশ কিছুদিন বেগুন বিক্রি হবে।
শিমুলবাড়ী এলাকার ভুট্টা চাষি জহির উদ্দিন ও আব্দুল হালিম জানান, গত বছর ধরলার বুকে পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ করেছি। খরচ বাদে বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছে। সেই আশায় এবারো ভুট্টা চাষাবাদ করেছি।আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বছরও ভুট্টার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
নাও ডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল এলাকার কৃষ্ণানন্দ বকসি মরিচ চাষী গোবিন্দ চন্দ্র রায় জানান, ধরলা নদীর বুকে এক বিঘা জমিতে মরিচ ক্ষেত লাগানো হয়েছে। ভালো ফলন হয়েছে , দামও বেশি। আশা করছি অনেক টাকা লাভ হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, ধরলা নদীর অববাহিকায় এবার ১১৫ হেক্টর আলু, ১০ হেক্টর মরিচ, বাঁধা -ফুলকপি ২৫ হেক্টর, বেগুন ১৫ হেক্টর, সরিষা ২৫ হেক্টর, ভুট্টা ৯৫০ হেক্টর, ডাল ১৫ হেক্টর, বাদাম ১৫ হেক্টর কলা ৮০ হেক্টর ও টমেটো ১০ হেক্টরে কৃষকরা চাষাবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চরাঞ্চলের এ সকল ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে।