প্রতিবেদন: মাজহারুল আনোয়ার খান
ঢাকা, ১০ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়াতে গত এক বছরে দেশব্যাপী বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যবস্থাগুলোকে সমন্বিত করে একটি শক্তিশালী ও আন্তঃসংযুক্ত কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) উদ্যোগটি সুশাসনে বদল আনছে। এর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে নির্বিঘ্ন তথ্য বিনিময়, সমন্বিত সেবা প্রদান এবং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকারের ডিজিটাল রূপান্তরের চারটি মৌলিক স্তম্ভের মধ্যে প্রথমটি হলো- বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যবস্থার মধ্যে আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, সহজ তথ্য বিনিময় এবং তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে বিচ্ছিন্ন সেবাগুলোকে একত্রিত করে একটি সমন্বিত ও নাগরিক কেন্দ্রিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যায়।তৈয়্যব জানান, এই লক্ষ্য অর্জনে সরকার দাতা ও ডেটা অংশীদারদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। এর উদ্দেশ্য, আলাদা আলাদা ডিজিটাল ব্যবস্থার বদলে একত্রে কাজ করার ব্যবস্থা করা। কাজের সময় তারা বুঝতে পারেন যে আইনের অনেক জায়গায় ফাঁক আছে।
যেমন সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মাবলি, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন, দেশের কম্পিউটার ক্লাউড নীতিমালা এবং ব্লকচেইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত এখনো কোনো নীতিমালা নেই। তাই এসব আইন তৈরি করার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, লাইসেন্স নীতিমালা পরিবর্তনসহ তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও টেলিযোগাযোগ আইন দু’টিতেই সংস্কার চলছে।
বিশেষ সহকারী বলেন, বর্তমান প্রশাসন শুরু থেকেই আন্তঃসংযোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। এটিকে ডিজিটাল রূপান্তর কৌশলের একটি মৌলিক স্তম্ভ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, পূর্ববর্তী সরকার প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য আলাদাভাবে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডেটা সেন্টার ও স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি করায় অসংখ্য ডিজিটাল ‘সাইলো’ বা বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছিল। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো এই বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থাগুলোকে সংযুক্ত করে একটি সার্বজনীন আন্তঃসংযোগ প্রতিষ্ঠা।
তৈয়্যব বলেন, পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তোলাটা সরকারের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। যা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সব দাতা ও ডেটা অংশীদারকে আমরা জানিয়েছি, সরকার আর বিচ্ছিন্ন ডিজিটাল ব্যবস্থা চালাবে না। এখন থেকে সরকার কেবল আন্তঃসংযুক্ত প্ল্যাটফর্মই তৈরি করবে।’
তিনি বলেন, কাজ এগোতে গিয়ে তিনটি বড় ঘাটতি চিহ্নিত হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হলো আইনগত কাঠামোর অভাব।
বিশেষ সহকারী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) থাকলেও সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা আইন, জাতীয় ক্লাউড নীতি বা ব্লকচেইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক কোনো আনুষ্ঠানিক নীতিমালার অস্তিত্ব নেই।
এই নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কাঠামোগত সমস্যাও ধরা পড়ে। টেলিযোগাযোগ আইনে, বিশেষ করে লাইসেন্স নীতিতে, একই ধরনের সমস্যা পাওয়া যায়, যা সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার।
তিনি বলেন, আন্তঃসংযোগ বাস্তবায়িত হলে মানুষের কাছে আরও কার্যকরভাবে সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তৈয়্যব বলেন, সরকার দেখতে পায় দেশে ডেটা খরচ অস্বাভাবিক বেশি। তদন্তে জানা যায়, এর মূল কারণ দেশের ডেটা অবকাঠামো। সমাধানে সারাদেশে ফাইবারাইজেশন (পুরোনো কেবল বদলে ফাইবার অপটিক কেবল বসিয়ে দ্রুত গতির ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা)কে কৌশলগত লক্ষ্য ধরা হয়।
এ বিষয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা হয়। তাদের নির্দিষ্ট প্রণোদনা দিয়ে ‘ফাইবারাইজেশন’-এর স্পষ্ট লক্ষ্য দেওয়া হয়।
পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাদাতাদের (আইএসপি) সঙ্গে আলোচনা হয় এবং প্রতিযোগিতার চাপ তৈরি করতে ‘স্টারলিংক’-এর মতো উদ্যোগ চালু করা হয়।
এর ফলে আইএসপিগুলো থেকে আরো ভালো সেবার অঙ্গীকার পাওয়া যায়।
তিনি জানান, সরকারের প্রথম লক্ষ্য হলো আন্তঃসংযোগকে এমন পর্যায়ে নেওয়া, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু তথ্য বিনিময়ই করবে না, বরং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্তও নেবে। এর জন্য উচ্চমানের ডেটা প্রয়োজন, যা নির্ভর করে শক্তিশালী আন্তঃসংযোগের ওপর।
বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো সেকেন্ডারি ডেটার ওপর নির্ভর করে, যা সবসময় নির্ভরযোগ্য বা নির্ভুল হয় না। এ সমস্যা সমাধানে সরকার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্থা- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), পরিকল্পনা বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় ও মহাহিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করেছে।
তিনি জানান, এই পাঁচ প্রতিষ্ঠান দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর মেরুদণ্ড। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আন্তঃসংযোগ দুটি স্তরে হবে। প্রথম স্তরে হবে এই মূল অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সরাসরি এপিআই বিনিময় ব্যবস্থা, দ্বিতীয় স্তরে গঠিত হবে জাতীয় ডেটা গভর্নেন্স ও আন্তঃসংযোগ কর্তৃপক্ষ, যাতে ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যুক্ত থাকবে।
প্রথম স্তর হবে আইনি কাঠামো— যেখানে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন, দেশের কম্পিউটার ক্লাউড নীতিমালা এবং ব্লকচেইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নীতিমালা থাকবে। দ্বিতীয় স্তরে থাকবে আন্তঃসংযোগ বিনিময় কাঠামো, এর একটি ডিজিটাল অর্থনীতি ও অন্যটি জাতীয় পর্যায়ের জন্য।
পরবর্তী ধাপ হলো প্রমাণীকরণ (অথেনটিকেশন) ব্যবস্থা। বর্তমানে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা নেই। এ জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অংশীদারিত্বে একটি প্রাথমিক সমীক্ষা চলছে।
এদিকে, আন্তঃসংযোগের নাগরিক সেবা ধাপও চালু হয়েছে, যাতে সিটি করপোরেশন, এনবিআর, পাসপোর্ট অফিস, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মে আনা হচ্ছে।
এই উদ্যোগের নাম ‘সিটিজেন ফেজ অফ ইন্টারঅপারেবিলিটি’, যা জাতীয় এপিআই কানেক্ট সিস্টেমের মাধ্যমে চালু হচ্ছে। এর লক্ষ্য বিচ্ছিন্ন সেবা ডেস্ক তুলে দিয়ে একীভূত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
তৈয়্যব জানান, প্রথমে খুব দ্রুত এগোনো হলেও সরকার দেখতে পায়, ভূমি, পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিদেশি বিক্রেতারা সিস্টেমগুলো পরিচালনা করায় এতে একটি অনমনীয়তা ছিল।
এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও প্রায় ১০০টি নাগরিক সেবা ইতোমধ্যেই একীভূত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে সত্যিকারের ডিজিটাল রূপান্তর সম্ভব নয়। সব সেবা জাতীয় এপিআই হাবে যুক্ত হলে প্রকৃত ডিজিটাল বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব হবে।
দ্বিতীয় স্তরের দু’টি মূল সিস্টেম ন্যাশনাল কানেক্টিভিটি বাস ও ন্যাশনাল সার্ভিস বাস গড়ে তোলা হচ্ছে, যা সরকারের আইসিটি ভিশনের মেরুদণ্ড হবে।
তৈয়্যব বলেন, বিচ্ছিন্ন ডিজিটাল পরিষেবাগুলো সত্যিকারের ডিজিটাল রূপান্তর নয়। সত্যিকারের রূপান্তর তখনই অর্জিত হবে, যখন সব পরিষেবা জাতীয় এপিআই হাবের মাধ্যমে আন্তঃসংযুক্ত হবে, যা প্রকৃত ডিজিটাল বিকেন্দ্রীকরণ সক্ষম করবে।
এ লক্ষ্যে জাতীয় ডেটা সেন্টার উন্নয়ন, বিডিসিএল-এর ক্লাউড অবকাঠামো আধুনিকীকরণ এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) অংশীদার নিয়োগ করা হচ্ছে।
স্টার্ট-আপ খাতে সুশাসন আনতে বিডা ও যুব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে সরকার, যাতে অর্থায়ন ও নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে। হাইটেক পার্ক আইন সংশোধন করে জমি ও স্থান বরাদ্দ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
অতীতে এসএমই ও স্টার্ট-আপ তহবিলগুলো দলীয় সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। এর পুনরাবৃত্তি রোধ করতে, সুস্পষ্ট নির্বাচন মানদণ্ড স্থাপন করা হয়েছে। হাই-টেক পার্ক আইনকে ভূমি ও স্থান বরাদ্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশোধন করা হয়েছে।
বিশেষ সহকারী বলেন, এটুআই এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) বড় ধরনের সংস্কার আনা হয়েছে। এটুআই-র সকল দুর্বল প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।
ডি-নথি সিস্টেম, যা আগে সার্ভার ডাউন, দুর্বল ভার্চুয়াল মেশিন পর্যবেক্ষণ এবং ড্যাশবোর্ডের অভাবে সমস্যা-জর্জরিত ছিল, এখন তা উন্নত করে আরও ব্যাপক ব্যবহারের জন্য এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, সরকার ডিজিটাল সেবার মান উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। আমরা সবকিছুই অপটিমাইজ করেছি এবং ‘ডি-নথি’কে অনেক ভালো অবস্থানে নিয়ে এসেছি। ‘আমরা এখন ‘ডি-নথি’কে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিচ্ছি, যাতে এর ব্যাপক গ্রহণযেগ্যতা নিশ্চিত হয়। উদ্ভাবনী অংশটি ‘এ-টু-আই’-এর হাতে থাকবে। তবে অপারেশনাল দায়িত্ব ধীরে ধীরে ‘ডিওআইসিটি’-তে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কমিউনিকেশনস সেন্টারে (বিসিসি) হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মান পরীক্ষার সুবিধা তৈরি এবং সার্চ অবকাঠামোর উন্নয়নসহ ব্যাপক উন্নয়নকাজ চলছে।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সাইবার সেফটি অর্ডিন্যান্সের অধীনে জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত সক্ষমতা গড়ে তোলা হচ্ছে। একটি জাতীয় সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (এসওসি) প্রতিষ্ঠার কাজও চলছে।
সরকার গত বছর ২০ থেকে ২১টি আইসিটি প্রকল্প পর্যালোচনা করে একটি প্রকল্প বন্ধ করে বাকি প্রকল্পগুলোর পুনর্মূল্যায়ন করেছে। প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বর্তমান বাজেটে নতুন প্রকল্প নেই বরং বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সার্টিফিকেট অথরিটি থেকে শুরু করে ‘ডিওআইসিটি’র ‘এন্ড মাইল প্রকল্প’ পর্যন্ত সব বিভাগই ব্যবহারকারী তথ্য-কেন্দ্রিক পেমেন্ট সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
নেটওয়ার্ক সংযোগ এখন কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এনএমএস) মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে, যা পেমেন্টের সঠিকতা নিশ্চিত করছে।
টেলিকম ও আইসিটি খাতে স্বাধীনভাবে দুটি শ্বেতপত্র তৈরি করা হচ্ছে, তবে সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।
সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা ছয়টি টেলিকম কোম্পানির মধ্যে সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা ১২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের ওপর বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ ইন্টারনেট নির্ভরতা কমিয়ে ৫০-৫০ ভাগ করার নতুন নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিকম কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) ১০টিরও বেশি সংস্কার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি পিএলসির ভিএসএট সেটের মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে মাত্র দেড় হাজার টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে, যা শিপিং মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেড (টিএসএস) কাঠামোর অধীনে টেলিকম উৎপাদনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ সহজ করতে বিনিয়োগকারীদের সাথে আলোচনা চলছে।
একটি বিস্তৃত টেলিকম নীতিমালা মন্ত্রিসভায় প্রেরণ করা হয়েছে এবং এটি পর্যালোচনার পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
সরকার ডিজিটাল ও টেলিকম নীতিগুলোকে সমন্বিত ও কার্যকর করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
জাতীয় ইন্টারঅপারেবিলিটি ও ডেটা গভর্ন্যান্সের ওপর ব্যাপক কাজ চলছে, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের ডিজিটাল সেবা, কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণকে নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক করা হবে।
আগামী মাসে বাংলা ভাষার ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেয়া হবে। বর্তমানে বাংলা টেক্সট অধিকাংশই বই ও
প্রিন্ট মাধ্যমে সীমাবদ্ধ। এটিকে বৃহৎ ভাষা মডেল (এলএলএম) তৈরির জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এর ফলে বাংলা ভাষায় এআই প্রযুক্তির পথ সুগম করবে।
ডিজিটাল কৌশল চারটি মূল কাঠামোর ওপর নির্মিত: আইনগত, ইন্টারঅপারেবিলিটি ও সংযোগ, সত্যতা যাচাই, ও সেবা। এগুলোর মধ্যে তিনটির যথাযথ অগ্রগতি হয়েছে। তবে সত্যতা যাচাই খাত এখনও পিছিয়ে রয়েছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে দেশের আইসিটি সুবিধাগুলোকে প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্রে রূপান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনএসডিএ) সহযোগিতায় আধুনিক প্রশিক্ষণ কারিকুলাম তৈরি চলছে যা আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তারপর উদ্যোক্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পাইথন প্রোগ্রামিং ও অন্যান্য আইসিটি দক্ষতায় সনদভিত্তিক প্রোগ্রাম চালু করা হবে।