শিরোনাম
লালমনিরহাট,২২ জানুয়ারি,২০২৫(বাসস) : ঘন কুয়াশায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে লালমনিরহাটে। সূর্যের উত্তাপ না থাকায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারনে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে শিশু ও বয়স্কদের। সারাদিন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারদিক যার ফলে রাতের পাশাপাশি দিনভর প্রচন্ড শীত অনুভূত হয় , আর এতে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম। বেশি বিপাকে পড়েছে নদীপাড়ের ও চরাঞ্চলের মানুষজন।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হওয়ার তথ্যটি ‘বাসস’কে জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। কনেকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষজন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে বেশি কষ্টে পড়েছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখিরাও।
সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব রায় (৩২) বলেন, আজকে কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা একটু বেশি পড়েছে। দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে যার ফলে দিন ও রাতে সমান শীত অনুভূত হয়।
বড়বাড়ী ইউনিয়নের বুদারুর চরের কৃষক আমজাদ হোসেন (৫২) বলেন, ঠান্ডায় সকাল সকাল কাজে যোগ দিতে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে দিনে ও রাতে প্রায় একই পরিমাণ শীতের তীব্রতায় কষ্ট হচ্ছে । আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেছি কিন্তু ঠান্ডার কারনে কাজে যেতে পারছি না।
পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ভ্যান চালক আশরাফুল মিয়া (৪০) জানান, কষ্ট হলেও নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ আগের থেকে অনেকটা বেশি ঠান্ডা পড়েছে। এত বেশি ঠান্ডায় ভ্যানে যাতায়াত করতে চায় না লোকজন, তবুও বের হয়েছি।
এদিকে লালমনিরহাটের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার রায় বাসস’কে বলেন, শীতের কারনে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হচ্ছে হাসপাতালে। বিশেষ করে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। যেসব রোগীর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল আমরা শুধু তাদেরকেই ভর্তি নিচ্ছি। এখানে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের বেশিরভাগই সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত । এছাড়াও অনেকের শ্বাসকষ্ট,হাঁপানি ও খিচুনি রয়েছে। সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এ ঠাণ্ডায় যথাসম্ভব গরম পানি পান করাতে হবে।
আর অসুস্থ হলে তাজা ফলমূলের রস, শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ঠান্ডার কারনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।