বিশ্বের দুই বৃহত্তম বন্দর পরিচালনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী

বাসস
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৭
আজ দাভোসে ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। ছবি: পিআইডি

দাভোস (সুইজারল্যান্ড), ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বিশ্বের দুই বৃহত্তম বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এ. পি. মোলার-মেয়ার্স্ক বাংলাদেশের শিপিং শিল্পে বড় আকারের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে নতুন বন্দর নির্মাণে সহায়তা করতে এবং বাংলাদেশকে একটি প্রধান বৈশ্বিক রপ্তানি কেন্দ্রে পরিণত করতে চায়।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আজ দাভোসে ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম এবং এ.পি. মোলার-মেয়ার্স্ক চেয়ারম্যান রবার্ট মোলার উগলা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে এই প্রস্তাব দেন।

ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও জানিয়েছেন, তারা চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট কমাতে এবং নির্গমন হ্রাস করে বন্দরটির দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চায়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক এই লজিস্টিক কোম্পানির সিইও বলেন, নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং দূষণ হ্রাস করতে সহায়ক হবে।

সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম উল্লেখ করেন যে ডিপি ওয়ার্ল্ড যেখানে বিনিয়োগ করেছে, সেখানেই উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছে। তিনি আরও জানান, ২০২২ সালে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তখনকার সরকার তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।

সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম জানান, তারা চট্টগ্রাম বন্দরে একটি ডিজিটাল অনলাইন কাস্টমস পদ্ধতি চালু করতে চান, যা দুর্নীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে।

তিনি আরও জানান, তারা বাংলাদেশের ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোগুলোতেও বিনিয়োগ করতে চান।

প্রধান উপদেষ্টা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইমকে বলেন, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে আরও বন্দর নির্মাণ করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি করতেই হবে কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে জড়িত। আমরা এটিকে অঞ্চলটির সবচেয়ে বড় বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা বাড়াতে চায়, কারণ বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের জন্য একটি আঞ্চলিক রপ্তানি হাব হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দ্রুত কাজ করতে হবে, কারণ সময় হচ্ছে একটি খরচ।’

ডেনমার্ক-ভিত্তিক এ. পি. মোলার-মেয়ার্স্ক চেয়ারম্যান রবার্ট মোলার উগলা বলেন, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে এবং তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তায় এটিকে একটি পরিবেশবান্ধব বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চান।

রবার্ট মোলার উগলা জানান, তারা মরক্কো এবং ওমানেও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের বিনিয়োগে ওমানের সালালাহ বন্দর বিশ্বের অন্যতম সেরা বন্দরে পরিণত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এ. পি. মোলার-মেয়ার্স্কের কর্মকর্তাদের ঢাকায় আসার এবং বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বাংলাদেশি বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে বেশ কিছু বন্দর নির্মাণ করতে হবে যাতে আমরা আঞ্চলিক ব্যবসার একটি কেন্দ্র হিসেবে আমাদের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সতর্কতা নির্দেশনা
নিষিদ্ধ পলিথিন, শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে অভিযান 
গবাদিপশুর খামার করে সচ্ছলতা পেল জোবেদা খানম 
সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল জব্দ 
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষা বরণ করেছে উদীচী 
করোনা ও ডেঙ্গু রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি নির্দেশনা
শরিয়াহ-ভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক শিগগিরই একীভূত করা হবে: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর 
ম্যাথুজের বিদায়ী টেস্টের দল ঘোষণা শ্রীলংকার
সাগর রক্ষায় বৈশ্বিক সহযোগিতার ডাক ব্যবসায়ীদের
সাবেক ওসি হাসান আল মামুন কারাগারে 
১০