শিরোনাম
ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি শোধনাগার স্থাপন, সার আমদানি এবং মসুর ডাল ক্রয়সহ ১২টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’। এতে মোট ব্যয় হবে ২হাজার ৩৯৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সচিবালয়ে ক্রয় কমিটির ২০২৫ সালের ৬ষ্ঠ সভায় এসব ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
ক্রয় প্রস্তাবগুলো হলো, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন’, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) জন্য সৌদি আরবের মা’এডেন থেকে ২য় লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন ১ম সংশোধনী প্রকল্প, কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার কাফকো ও সৌদি আরব থেকে ইউরিয়া, আন্তর্জাতিক সোর্স থেকে ফসফরিক এসিড আমদানি, বাফার গুদাম নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষা নদীর ওপর কদমরসুল এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ এবং পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্প।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, সভায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১ নং ৫০ এমএলডি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যৌথভাবে এই কাজটি করবে- জেডএইচইসি-বিওডব্লিউ-এসএমইডিআরআইসি। এতে ব্যয় হবে ৫১৮ কোটি ৬১ লাখ ২১ হাজার টাকা।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) জন্য সৌদি আরবের মা’এডেন থেকে ২য় লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) জন্য একই দেশের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৬তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রতি টন ৬১১ ডলার দরে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ২৯৮ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে প্রতি টন ৩৯৫.১৬ ডলার দরে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৪৪ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
এছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১২তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের পৃথক আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি টন ৩৮৯.৭৫ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ১৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ডিএপিএফসিএল-এর জন্য ২০ হাজার টন করে ৪০ হাজার টন ফসফরিক এসিড (পি২ও৫: ৫২-৫৪ শতাংশ) আমদানির দু’টি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দু’টি প্রস্তাবেই ফসফরিক এসিড সরবরাহের কাজটি পেয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই। এসিড প্রস্ততকারক মূল কোম্পানি হচ্ছে চীনের গুইয়ানজি পেংগুয়ি ইকো-টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফস্কর পিটিওয়াই লিমিটেড। এর মধ্যে প্রথম প্রস্তাবে প্রতি টন ৬৩৩.৪২ ডলার দরে ২০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫২ কোটি ২ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রতি টন ৬১৭.৭৬ ডলার দরে ২০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫০ কোটি ৭৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়া বৈঠকে সেতুর পূর্ত কাজ সম্পাদনে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং গুদারাঘাটের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদমরসুল ব্রিজ নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের ডব্লিউপি-১ প্যাকেজের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ব্যয় হবে ৩৯৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। যৌথভাবেএ কাজটি করবে- জিবিসি ও জিএসডিসি।
একই সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের ডব্লিউ-১০ প্যাকেজের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ব্যয় হবে ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ কাজটি করবে যৌথভাবে- মো. মইনুদ্দিন (বাশি) লিমিটেড, মেসার্স হামিম ইন্টারন্যাশনাল ও মো. রাশাদুজ্জামান পিটার।
অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের অধিকতর উন্নয়ন্ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের দুটি পৃথক প্যাকেজের পূর্ত কাজ সম্পাদনে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুটি কাজই পেয়েছে এম জামাল অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে প্যাকেজ-৬ এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে ১২৭ কোটি ৯৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-৭ এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে ১২৫ কোটি ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়া বৈঠকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি সরবরাহ করবে নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড। প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯২ পয়সা দরে এতে ব্যয় হবে ৯৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা।