শিরোনাম
ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতাধীন ২টি কাজে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবারা (মোল্লারহাট ব্রিজের নিকট) মোল্লারহাট পুরাতন ফেরী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ১ হাজার ৫৯০ মিটার সড়ক বিটুমিন কার্পেটিং দ্বারা উন্নতিকরণ বাবদ ১ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও একই সড়কে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ বাবদ ২৪ লাখ ১৯ হাজার ১০৫ টাকার কাজ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গোপালগঞ্জ কর্তৃক গৃহীত হয়।
অভিযানকালে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চর গোবরা, মোল্লারহাট পুরাতন ফেরী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়নি। অথচ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গোপালগঞ্জ কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী উক্ত কালভার্টটি প্রকৃত স্থান থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দুরে দত্তডাঙ্গা নামক স্থানে ম্যাকভিশন এগ্রো লি: এর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খানের ফিড মিলের প্রবেশ মুখে নির্মাণ করা হলেও টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়, ওই ফিড মিলের আশেপাশে কোন জনবসতি নাই। শুধুমাত্র ওই ফিড মিলে প্রবেশের জন্য রাষ্ট্রীয় ২৪ লাখ ১৯ হাজার ১০৫ টাকা অপচয় করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলজিইডি গোপালগঞ্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই ফিড মিলের প্রবেশ মুখে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করেছেন বলে অভিযানকালে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
এ ছাড়া গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাধীন ডুমরাসুর জতিন সাধুর বাড়ী-সুশীল বৌল ভায়া জিপিএস সড়ক উন্নয়ন সংক্রান্ত ৭২০ মিটার রাস্তা নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনায় টিম জানতে পারে, ৭২০ মিটার রাস্তার মধ্যে আনুমানিক ৪০০ মিটার রাস্তা ব্যক্তি মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত। ওই ৪০০ মিটার রাস্তার আশেপাশে সাধারণ জনগণের কোন বসতি না থাকলেও পার্ক কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন পার্কের অভ্যন্তরে সরকারিভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ওই ৭২০ মিটার সড়কের মধ্যে পার্কের অভ্যন্তরে থাকা ৪০০ মিটার রাস্তার জন্য ব্যয়কৃত প্রায় ৪২ লাখ ৪ হাজার ৭৩২ টাকা গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর -এর উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা প্রাক্কলন প্রস্তুত, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বিল পরিশোধের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপচয় করেছেন বলে অভিযানকালে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
এ দিকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে সরকারি ইউনানী ওষুধসহ বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাত সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ওই হাসপাতালের ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট-বরাদ্দ, দরপত্র, কোটেশন, কার্যাদেশ, ওষুধ গ্রহণের চালান, ওষুধ স্টক রেজিস্টার, বিতরণ রেজিস্টার, রোগীকে ওষুধ প্রদানের শর্ট স্লিপ ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করা হয়। এছাড়াও বাজেট বরাদ্দ, ব্যয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, ওষুধ ও অন্যান্য ক্রয় সংক্রান্ত রেজিস্টার এবং ওষুধ ও অন্যান্য বিতরণ সংক্রান্ত রেজিস্টার পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।