শিরোনাম
চাঁদপুর, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার ডাকাতিয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় পানি সংকটে পড়েছেন হাজারো কৃষক ও নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গল্লাক বাজারের পূর্ব পাশে ব্রিজের দক্ষিণে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে মাছ শিকার করায় এক পাশে পানি থাকলেও অপর পাশে পানি নেই।
এতে গল্লাক থেকে শুরু করে দক্ষিণে লক্ষীপুর জেলার কাটাখালি পর্যন্ত হুমকিতে পড়েছে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ হেক্টরের আবাদি কৃষি জমি। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, আবাদি জমির রোপা ধান রক্ষায় দ্রুত পানির ব্যবস্থা করা। স্থানীয় একটি মহল মাছ শিকারের জন্য বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক কিবরিয়া, আয়ুব মিয়া, হোসেন মিয়া, অজিত দাসসহ কয়েকজন জানান, কিছু মানুষ লাভবান হওয়ার জন্য নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকসহ স্থানীয় মানুষ। নদীতে পানি একেবারে কম, তার উপর বাঁধ দেয়ায় আমরা পানি সংকটে ভুগছি। গোসল করা, বিভিন্ন ধরনের ধোয়ার কাজসহ কৃষি জমিতে নদীর পানি প্রয়োজন হয় কিন্তু এখন নদীতে পানি নেই।
কৃষক সুকুমার ও আলী বলেন, ডাকাতিয়ার এই শাখা নদীটি মৃত হয়ে যাচ্ছে। কোন গভীরতা নেই। এরমধ্যে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরলে নদীকে আর বাঁচানো যাবে না। পানি সংকটে ফসলি জমিতে পানি দিতে পারছিনা। এতে করে কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। নদীর বাঁধ অপসারণ করে পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
স্থানীয় স্কীম ম্যানেজার মোহসীন বলেন, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করতে স্থানীয়দের নিষেধ করা হয়েছে। নদী গভীরতা বাড়াতে খনন জরুরি। তা না হলে কৃষকদের রোপা আমনে প্রভাব পড়বে। তিনি প্রশাসনের দ্রুত সময়ে হস্তক্ষেপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, নদীতে বাঁধ দেয়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে। নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা অপরাধ। উপজেলার কোথায় কোথায় বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় বাঁধগুলো অপসারণ করা হয়েছে। সামনে এসব জায়গা গুলোতে অবৈধভাবে বাঁধ দেয়া হলে দ্রুত অপসারণসহ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষি কাজের পানির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবু তাহের জানান, ডাকাতিয়া নদীতে বাঁদ দিয়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, এই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, আমরা কৃষকদের সাথে কথা বলেছি এবং এই সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের সহায়তার জন্য দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কাজ করে যাচ্ছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় ও এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। আশাকরি সহসাই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।